বাংলা হান্ট ডেস্ক : ছবি বিভ্রাটে বেজায় বিপাকে মদন মিত্র (Madan Mitra)। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক তিনি। তবে দাপুটে তৃনমুল নেতার থেকেও তিনি বেশি পরিচিত ‘বাংলার কালার ফুল বয়ের ইমেজে’। চোখে রঙিন রোদ চশমা পরে একেবারে ‘হিরোয়িক এন্ট্রি নেন সব জায়গায়। তাঁকে ঘিরে ওঠে সেলফির ঝড়। সেই এমএমই এবার দাবি করলেন রবীন্দ্রনাথের মতো তাঁর ছবিও লোকে বাড়িতে বাঁধিয়ে রাখে। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Haimanti Ganguly) সঙ্গে তাঁর ছবি ভাইরাল হতে এভাবেই নিজের ‘দোষ ঢাকলেন’ তৃণমূল বিধায়ক।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে আর এক নারীর হদিশ পান তদন্তকারী আধিকারিকরা। ধৃত ছাত্রনেতা কুন্তল ঘোষই (Kuntal Ghosh) প্রথম নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে এই রহস্যময়ী নারীর জড়িত থাকার কথা বলেন। তাঁর নাম হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। কুন্তল আধিকারিকদের কাছে দাবি করেন, দুর্নীতির সব টাকা নাকি যেত হৈমন্তীর কাছেই। মডেল, অভিনেত্রী হিসেবে টলিউডে পরিচিত মুখ হয়ে উঠছিল হৈমন্তী।
বছর আটেক আগে গোপাল দলপতির সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। তারপর ঘনিষ্ঠতা, প্রেম, বিয়ে। গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী হাওড়ার এই যুবতী। জানা যাচ্ছে, হৈমন্তীর সঙ্গে বিয়ের পর তাঁর কথাতেই নিজের নাম বদলে ফেলেন। হন গোপাল দলপতি থেকে হয়ে যান আরমান গঙ্গোপাধ্যায়।
রাজ্য জুড়ে যখন গোপাল-হৈমন্তীকে নিয়ে তোলপাড়, তখনই মদন মিত্রর সঙ্গে হৈমন্তীর পুরনো একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে তা বিশেষ আমোল দিচ্ছেন না তিনি। শুরু হয় কানাঘুষো। মদনের দাবি, তিনি হৈমন্তী বলে কাউকে চেনেনই না। কুন্তল বা গোপালের সঙ্গেও তাঁর কোনও পরিচয় নেই। পরিষ্কার বলে দেন, প্রতিদিনই বিভিন্ন মিটিং, মিছিল, অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে বহু নারী ছবি তোলার আবদার জানান। তিনিও সেই আবদার রাখেন। কিন্তু ছবি তোলার আগে কথা বলে তাঁর বিষয়ে তথ্য জোগাড় করা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে।
কামারহাটির বিধায়ক এদিন বলেন, ‘অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি তুলে বাঁধিয়ে রাখে। যেমন রবীন্দ্রনাথের ছবি বাঁধিয়ে রাখে। এতে অসুবিধা কোথায়? ছবিটা যে আমার, তা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। আমি কলেজ জীবন থেকেই দেখেছি আমার ছবি বেরলেই ভাইরাল হয়। উত্তমকুমারের ছবি যেমন স্টুডিয়োয় ঝোলানো থাকে, তেমন আমার সঙ্গে ছবি তুললেই ভাইরাল। মেয়েদের একটু ফর্সা দেখতে হলেই আমার সকলকে একই রকম লাগে। আলাদা করে বুঝতে পারি না। তার পর ভুলে যাই কোথায় দেখেছি।’ মদনের হাস্যমুখে বলেন, ‘ছবি তোলার আগে তো তাহলে বলতে হয়, একটু বসুন, কথা বলুন, বাবার পরিচয় জানান। একজন মহিলাকে এর চেয়ে বেশি তো জিজ্ঞেস করা যায় না।’ হৈমন্তীর সঙ্গে মদন মিত্রর ছবি ভাইরাল হওয়ার পরই অনেকে বলতে শুরু করেন এবার তাহলে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তের জাঁতাকল চেপে ধরবে তৃণমূল নেতাকেও। কিন্তু বাস্তবে এই অভিযোগ একরকম ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন মদন মিত্র।