কাটা হবে ব্রিটিশ আমলের অজস্র গাছ, ‘চিপকো” আন্দোলনের মতো রুখে দাঁড়াল বাঁকুড়াবাসী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রকৃতিকে ধ্বংস করে আধুনিকতা, অরণ্যকে ধ্বংস করে নগর সভ্যতার দামামা এখনো বেজে চলেছে বারবার। কিন্তু একদিকে যেমন আধুনিক হতে হবে, তেমনি বাঁচাতে হবে প্রকৃতিকেও। তাহলে নিজেদের পাতা ফাঁদে নিজেরাই পা দেবো আমরা। এ কথাই বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। কখনও নর্মদা বাঁচাও, কখনও চিপকো কখনও আবার দূষণের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে পড়েছে স্কুলপড়ুয়া বাচ্চারা। একবার বাঁকুড়া থেকে সামনে এলো এমনই এক ঘটনা।

চিপকো আন্দোলনের সময় যেমন গাছ জড়িয়ে ধরে অরণ্য ধ্বংসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সাধারণ মানুষ এবং পরিবেশপ্রেমীরা। এমনই ঘটনা দেখা গেল বাঁকুড়ার সাহেব বাঁধেও। সাহেব বাঁধ এলাকায় রাস্তার দু’পাশ জুড়ে প্রায় দুই কিলোমিটার অবধি তাল গাছ লাগিয়েছিলেন ব্রিটিশরা। এই প্রাচীন গাছগুলি এখনও রাস্তাটিকে এক অন্যরকম মনোরম পরিবেশে পরিণত করেছে। কিন্তু সেই গাছগুলিই এবার কাটতে উদ্যত হয়েছে প্রশাসন। রাস্তা সারাইয়ের কাজের জন্য গাছগুলি কেটে ফেলা দরকার বলেই মত তাদের।

কিন্তু এভাবে অরণ্য ধ্বংসের বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছেন সাধারন মানুষ। পরিবেশ প্রেমীদের সাথে সাথেই গাছের গায়ে ‘আমাদের বাঁচান’ পোস্টার লাগাচ্ছেন তারাও। গ্রীন ফোর্স নামক এক সংস্থার সম্পাদক আশিস পাল বলছেন, ” ব্রিটিশ আমলে বাঁধটা তৈরি হওয়ায় নাম হয়েছে সাহেব বাঁধ ৷ আর এর পারে প্রায় দু কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে রয়েছে তালগাছ ৷ আমরা ছোট থেকে দেখছি ৷ এটা সারেঙ্গার ল্যান্ডমার্ক ৷ এটা যাতে নষ্ট না হয়ে যায় তার জন্য আমরা এই আন্দোলনে সামিল হয়েছি ৷”

পরিবেশপ্রেমী মৈনাক অধিকারীও জানান, তারা উন্নয়নের বিরুদ্ধে নয়। সরকারি কাজকে সর্বদা সমর্থন করবেন তারা। কিন্তু গ্রামের শান্ত পরিবেশকে নষ্ট করে, অরণ্য ধ্বংস করে সেই উন্নয়ন হলে আগামী দিনে তা অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। তারা বলেন, পরিবেশকে বাঁচিয়ে কীভাবে উন্নয়ন করা হবে তা নিয়ে আলোচনা করতেও রাজি আছেন তারা। আর সেই কারণেই তাদের এই আন্দোলন।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর