বাংলাহান্ট ডেস্ক : টানা কয়েকদিন ধরে সংবাদ শিরোনামে থাকার পর এবার ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে মুর্শিদাবাদে। নববর্ষের দিন থেকেই একটা একটা করে দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। যদিও এখনো চলছে ধরপাকড়। সেই সঙ্গে স্থানীয়দের একটা বড় অংশ এখনো রয়েছেন আতঙ্কে। অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনের তরফে যখন বলা হচ্ছে, ঘরছাড়াদের শীঘ্রই আবার ফিরিয়ে আনা হবে, তখনই মালদহের (Malda) আশ্রয় শিবিরে দেখা গেল অন্যরকম চিত্র। জোর করে নাকি ফেরানোর চেষ্টা চলছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে এমনি অভিযোগ এনেছেন আশ্রয় শিবিরের শরণার্থীরা।
মালদহের (Malda) আশ্রয় শিবিরে বড় অভিযোগ মুর্শিদাবাদের ঘরছাড়াদের
বিগত কয়েক দিনে বারে বারে ঘুরেফিরে এসেছে দুটি নাম, সুতি আর ধুলিয়ান। অশান্তির আগুনে এখানে একের পর এক বাড়ি পুড়েছে। লুঠ হয়েছে চাল ডাল থেকে সোনাদানা সবকিছুই। এমনকি ছাগল পর্যন্ত তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সর্বস্ব হারিয়ে প্রাণটুকু নিয়ে অনেকেই জেলা ছেড়ে মালদহের (Malda) বৈষ্ণবনগরে আশ্রয় শিবিরে গিয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এবার অভিযোগ, সেখান থেকেও জোর করে তাদের ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
কী অভিযোগ করেছেন তারা: শুক্রবার বৈষ্ণবনগরে আশ্রয় শিবিরে ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলতে যান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সামনে পেয়ে ক্ষোভ, আতঙ্ক উগরে দেন আশ্রয় নেওয়া মানুষজন। তাদের অভিযোগ, জোর করে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে বলা হয়েছে। ভয়ে কেউ নাকি সারারাত ঘুমাতে পারেননি শিবিরে। অনেকেরই ভিটেমাটি কিছুই নেই। তাহলে কোথায় নিয়ে যাবে? আতঙ্ক গ্রাস করেছে ঘরছাড়াদের।
আরো পড়ুন : এবার OMR এর কার্বনকপি হাতে পাবেন পরীক্ষার্থীরা? নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে একগুচ্ছ বদলের প্রস্তাব SSC-র
হুমকির মুখে বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দারাও: এখানেই শেষ নয়। তারা যাতে সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে না পারেন তার জন্য থাকার জায়গাটা ঘিরে দেওয়া হয়েছে ত্রিপল দিয়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা ছিড়ে ফেলে ত্রিপল। এমনকি বৈষ্ণবনগরের (Malda) যেসব বাসিন্দা ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, হুমকি পাচ্ছেন তারাও। একজন জানান, যাতে তুলে নিয়ে না যেতে পারে সে জন্য সারা রাত পাহারা দিচ্ছেন তারা। আবার তাদের মুখ না খোলার জন্য হুমকিও নাকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন : ‘আবার প্রশ্ন বিক্রি করে ৫০০ কোটি তুলবে’, নতুন নিয়োগ নিয়ে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী
মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমকে। একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে সরকারি ক্যাম্পে। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। জাতীয় এবং রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগাল সার্ভিস অথরিটির তরফে একজন করে সদস্য থাকবেন ওই কমিটিতে। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ঘরছাড়াদের চিহ্নিত করে তাদের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখবে ওই কমিটি।