ঢেলে সাজিয়েছিলেন ইন্ডাস্ট্রিকে, অথচ মৃত‍্যুর পর সরকারি স্বীকৃতিটুকুও পেলেন না সুখেন দাস, আক্ষেপ পিয়ার

বাংলাহান্ট ডেস্ক: অভিনেতা বনি সেনগুপ্তর মা হওয়ার পাশাপাশি পিয়া সেনগুপ্তর (Piya Sengupta) আরো একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি সুখেন দাসের (Sukhen Das) মেয়ে। সেই সুখেন দাস যিনি একাধারে ছিলেন অভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজক। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অনেক কিছুই তাঁর অবদান। অথচ এমন একটা মানুষই যোগ‍্য সম্মান পেলেন না, হতাশ মেয়ে পিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে স্মৃতিচারণা করেছেন পিয়া। আগেকার টলিউড ইন্ডাস্ট্রি, তাঁর অভিনয়ে আসার গল্প, সেটে সুখেন দাসের উপস্থিতির স্মৃতি নতুন করে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। পিয়া জানান, বাবা বলেছিলেন ছোট মেয়েকে অভিনয়ে আনবেন না। কিন্তু বড় মেয়েকে যখন মাত্র ১৩ বছর বয়সে ক‍্যানসারে হারান তখনি সুখেন দাস ঠিক করেন ছোট মেয়ে পিয়াকেই ইন্ডাস্ট্রিতে আনবেন।

বাবার হাত ধরে সেই তাঁর অভিনয়ে পদার্পণ। প্রথম ছবিতেই নাকি বাবাকে ‘দাদা’ বলে ডাকতে হয়েছিল। সে কী বিড়ম্বনা! পিয়া জানান, বাড়ির মতো সেটে জোরে ধমকাতে পারতেন না সুখেন দাস। কিন্তু কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করা যেত না। তাই প্রথম প্রথম বাবাকে দাদা বলে ডাকতে গিয়ে বেশ কয়েক বার হোঁচট খেয়েছিলেন পিয়া। শেষে সেটে বাবাকে দাদা বলেই ডাকতে শুরু করেন তিনি।

সুখেন দাসের পরিচালনায় অভিনয় করেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন পিয়া। তাঁর দাদা, কাকা মায় হবু স্বামীও টলিউডের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। কিন্তু সে সময়ে কেউ স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে রে রে করে ওঠেননি। শুধু তো পিয়া একা নন, পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর দুই মেয়ে চুমকি ও রিনা চৌধুরীও তখন কাজ করতেন ইন্ডাস্ট্রিতে। পিয়ার কথায়, সে সময়ে এত নিরাপত্তার অভাবে ভুগতেন না কেউ।

এখন তিনিও সরে এসেছেন অভিনয় থেকে। আর বাবা সুখেন দাসের স্মৃতিও মুছে যেতে বসেছে ইন্ডাস্ট্রি থেকে। পিয়ার ক্ষোভ, ছবি থেকে সংলাপ, গান সব দিক দিয়েই উৎকৃষ্ট মানের কাজ উপহার দিলেন তাঁর বাবা। অনেকে বলেন, সুখেন দাসের ছবি ‘সেন্টিমেন্ট’এ ভরা। কারণ তিনি জানতেন, বাঙালি দর্শক আবেগ বেশি ভাল খায়।

পিয়া বলেন, মহানায়ক উত্তম কুমারের পর সুখেন দাসই ইন্ডাস্ট্রিকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। অথচ কজন মানুষ মনে রেখেছেন তাঁকে? সরকারি সম্মান দূরের কথা, একটা বেসরকারি পুরস্কারও পাননি সুখেন দাস। রাজ‍্য সরকারের কাছে পিয়ার অনুরোধ, এবার অন্তত মানুষটাকে যোগ‍্য সম্মানটা দেওয়া হোক।