বাংলাহান্ট ডেস্ক : মমতা-পিকে বিচ্ছেদ নিয়ে বহুদূর গড়িয়েছিল জল্পনা। মঙ্গলবার জল পড়ল সেই সব জল্পনার আগুনেই। এদিন নজরুল মঞ্চে দলের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকে এক মঞ্চেই দেখা গেল মমতা এবং প্রশান্ত কিশোরকে। শুধু মমতাই নয়, যাঁদের সঙ্গে সম্প্রতি পিকের দূরত্ব বেড়েছিল বলে তোলপাড় শুরু হয়েছিল ছিলেন সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সীরাও। এদিন একাধিক বার কথাও বলতে দেখা যায় প্রশান্ত এবং মমতাকে।
পুরভোটের আগেই রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে ওঠে তৃণমূল এবং প্রশান্ত কিশোরের বিচ্ছেদের খবরে। জানা যায় পিকের সংস্থা আইপ্যাকের অতি সক্রিয়তাকে ভালো চোখে দেখছে না তৃণমূল। ফলে তৈরি হতে থাকে দূরত্ব। এদিনের এই দৃশ্য অবশ্য যবনিকা টানল সেই জল্পনাতেই। তৃণমূলের একাংশের দাবি, কখনও তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে পিকের কোনও সমস্যাই হয়নি। রাজনৈতিক কারণেই রটনা সৃষ্টি করা হয়। অপর অংশ অবশ্য বলছে যে দুপক্ষের মতে অমিল দেখা দিলেও তা কখনওই সীমা অতিক্রম করেনি।
প্রসঙ্গত, পুরভোটের আগেই প্রার্থী তালিকা নিয়ে আই প্যাকের সঙ্গে সমস্যা তৈরি হয় তৃণমূলের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুব্রত বক্সী এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রার্থী তালিকাই চূড়ান্ত আইপ্যাকের বানানো নয়। এই সময় নাকি মমতাকে ফোনে পিকে জানান একাধিক রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে আর কাজ করতে চায় না তাঁর সংস্থা আইপ্যাক। মমতাও সায় দেন তাতেই। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘এক ব্যক্তি এক পদ ‘ নীতি নিয়েও তৈরি হয় সমস্যা। অভিষেক এই নীতি আনতে চাইলেও বাধা দেন খোদ মমতা। এরপরই হঠাৎ করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ফেসবুক কভার ফটো বদলে যায় ওই নীতির পোস্টারে। আইপ্যাকের ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে সরব হয় তৃণমূল। এই সমস্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় পিকের সঙ্গে মমতার দূরত্বের রটনা।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমুলের এহেন ঐতিহাসিক জয়ের পিছনে যে বহুলাংশে পিকেরই হাত তা স্বীকার করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও। সামনেই লোকসভা ছাড়াও আরও অনেকগুলি রাজ্যের নির্বাচন। ফলে এখন কোনও মতেই রাজনৈতিক পদক্ষেপে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় মমতার দল।
উল্লেখ্য, ২০২১ সাল অবধিই প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তি ছিল তৃণমূলের। আপাতত নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমেই চলছে কাজ। আবার কবে নতুন করে চুক্তি করা হবে বা আদৌ হবে কি না তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।