বাংলাহান্ট ডেস্কঃ চীন থেকে আগত মারণ COVIED-19। যারা জেরে সারা বিশ্ব যেন কম্পমান। মারা গিয়েছে অনেক মানুষ। পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যাটাও কিন্তু কম নয়। কিছুদিন আগেই দিল্লির (Delhi) মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Aurobindo Kejriwal) ঘোষণা করেছিলেন, করোনায় আক্রান্ত সংকটজনক রোগীদের ক্ষেত্রে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’-এর ভিত্তিতে প্লাজমা থেরাপি শুরু হবে। তার চার দিনের মাথায় এল প্রথম সাফল্যের খবর। রাজধানীর সাকেতের ম্যাক্স হাসাপাতালে (max hospital) করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হওয়া এক রোগীকে প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছিল। তিনি এখন অনেকটাই সুস্থ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সোমবার ঘোষণা করা হয়, প্লাজমা থেরাপিতে পজিটিভ রেজাল্ট মিলেছে। ভেন্টিলেটর সার্পোট থেকে সরিয়ে রোগীকে নর্ম্যাল বেডে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাস সূত্রে খবর, ৪ এপ্রিল ওই ব্যক্তির পজিটিভ ধরা পড়ে। প্রবল শ্বাসকষ্টের কারণে ৮ এপ্রিল রোগীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখতে হয়। ম্যাক্সের চিকিত্সকেরা জানান, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। টেস্টে টাইপ-১ রেসপিরেটরি ফেলিয়োরের সঙ্গে নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। তার মধ্যেই চিকিত্সকেরা নিশ্চিত হন রোগী করোনায় আক্রান্ত। ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারা প্রথম কোনও করোনা রোগীর উপর পরীক্ষামূলক প্লাজমা থেরাপি করে। মানবিকতার খাতিরেই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নেয়। সেইসঙ্গে দিল্লির কোনও হাসাপাতালে এটাই প্রথম প্লাজমা থেরাপি। জানা গিয়েছে, দিল্লির করোনা (corona) আক্রান্ত ওই রোগীর বয়স ৪৯ বছর।
গত বৃহস্পতিবারই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ঘোষণা করেছিলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ভিত্তিতে করোনা আক্রান্তদের ‘প্লাজমা থেরাপি’ করতে চলেছে দিল্লি। তবে, সকল আক্রান্তের জন্য নয়। সংকটজনক রোগীরাই আগে এই থেরাপির সুযোগ পাবেন বলে তিনি জানিয়েছিলেন। কেজরি সেদিন জানান, কেন্দ্রের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সবুজসংকেত এলেই দু-তিন দিনের মধ্যেই এই পদ্ধতিতে তাঁরা চিকিত্সা শুরু করবেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছিলেন, ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন, এমন সংকটজনক রোগীদেরই প্লাজমা থেরাপি করা হবে। তার জন্য ড্রাগ কন্ট্রোলার অফ ইন্ডিয়ার ছাড়পত্র লাগবে।
প্লাজমা থেরাপি যদিও চিকিত্সা বিজ্ঞানে নতুন কিছু নয়। শতাব্দীপ্রাচীন এক কার্যকরী চিকিত্সা পদ্ধতি। অতীতে একাধিকবার এই পদ্ধতি প্রয়োগে সাফল্য এসেছে। সম্প্রতি ইরান ঘোষণা করে, তারা প্লাজমা থেরাপি করেই করোনায় মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ইরানের দেখাদেখি এখন আমেরিকা-সহ বিশ্বের অনেক দেশই কিন্তু প্লাজমা থেরাপি চালু করে দিয়েছি। এককথায়, প্লাজমা থেরাপি হল প্লাজমা বা রক্তরসের স্থানান্তর। করোনা থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমা নিয়ে, আক্রান্ত অন্য রোগীর শরীরে তা প্রবেশ করানো হয়। এতে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের ভাইরাসকে মেরে, তাঁকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করে। করোনা থেকে কোনও ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠার পর ১৪ দিন তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হবে। তার মধ্যে একাধিকবার টেস্ট করা হবে। রেজাল্ট নেগেটিভ এলে, তাঁরই প্লাজমা নেওয়া যাবে।