বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে কোভিড এবং তারপর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মারাত্মক তাণ্ডবে রীতিমতো লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বাংলা। দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে রীতিমতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানুষ। গতকালই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সবমিলিয়ে ভেঙে পড়েছে প্রায় তিন লক্ষ ঘরবাড়ি। ১৫ লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করা হলেও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় এক কোটি মানুষের। ভেঙে পড়েছে প্রায় ১২৪ টি বাঁধ। কাল ইয়াস এবং ভরা কোটালের একযোগে আক্রমণে বিদ্যাধরী, রুপনারায়ন, মুড়িগঙ্গা সহ সমস্ত নদীগুলি ফুঁসে উঠেছিল। ফলতো নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর, কাকদ্বীপ, গোসাবা, কোশিয়ারি, ঝারগ্রাম বিধ্বস্ত হয়েছে সমস্ত এলাকায়।
গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যেহেতু বৃহস্পতিবারও চলবে বৃষ্টি, তাই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুক্রবার হেলিকপ্টারে রওনা দেবেন তিনি। বন্যা বিধ্বস্ত বাংলা ঘুরে দেখবেন। এবার নির্বাচনের পর প্রথমবার বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। শুক্রবার সম্ভবত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই ঝড় বিধ্বস্ত বাংলা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবেন তিনি। মূলত পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা আকাশপথে ঘুরে দেখবেন তারা।
সূত্রের খবর অনুযায়ী এরপর একটি একান্ত বৈঠকে বসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকাল সাংবাদিক বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন এখন কেন্দ্রের সাথে সংঘাতের সময় নয়। এখন হাতে হাত রেখে একযোগে কাজ করার সময়। সংঘাত দূরে সরিয়ে রেখে এই মুহূর্তে দরকার বাংলার বিধ্বস্ত পরিস্থিতির উন্নয়ন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতবছর আমফানের সময়ও একইসঙ্গে হেলিকপ্টারে বাংলা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছিলেন মোদী ও মমতা। এসময় বাংলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের তরফে অনুদান দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, ইতিমধ্যেই ইয়াস মোকাবিলার জন্য অগ্রিম ৪০০ কোটি টাকা বাংলাকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তরফে। ওড়িশা পেয়েছে ৬০০ কোটি। শুক্রবার এই সফরে ওড়িশার ঝড় বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এখন দেখার এই বৈঠক আদতে কতখানি সফলতা পায়। যদিও এর আগেই ১০ লক্ষ ত্রিপল এবং ত্রাণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দশ হাজার রিলিফ ক্যাম্প তৈরীর কথাও বলা হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা প্রায় কিছুই নয়। কারণ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মানুষ, তা অতি মর্মান্তিক। জায়গায় জায়গায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা, ভেঙে পড়েছে সমুদ্র বাঁধ। বিপুল ক্ষতি হয়েছে জীবন ও জীবিকার। তাই আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনের পর কি বার্তা দেন সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।