বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাইবার ক্রাইমের দুনিয়ায় এবার প্রতারকদের নতুন অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’। কিন্তু এক্ষেত্রে গ্রেপ্তারি শব্দটার উল্লেখ থাকলেও আদতে ভারতে কিংবা পৃথিবীর কোন দেশের আইনেই এই ধরনের গ্রেফতারের কথা বলা নেই। আসলে এটি হল সাইবার প্রতারণার একটি নতুন ফাঁদ। যা এখনকার এই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে প্রতারকদের নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নিয়ে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)
এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার। এবিষয়ে রবিবার ১১৫তম ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। একটি সচেতন মূলক অডিও ক্লিপ সম্প্রচারিত হয়। সেখানে একজন ব্যক্তি পুলিশের ইউনিফর্ম পরে অপর একজন ব্যক্তিকে তার মোবাইল নাম্বার ব্লক করে দেওয়ার ভয়ে দেখিয়ে আধার নম্বর চাইছেন। এই ভিডিও অডিও ক্লিপকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi) জানিয়েছেন কিভাবে এই মুহূর্তে চারিদিকে ডিজিটাল গ্রেপ্তারের মাধ্যমে প্রতারণা চক্র চলছে।
এক্ষেত্রে শিকারীরা প্রথমে প্রথমে কোন একজন ব্যক্তির সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। সেখান থেকেই তারা জেনে যায় ওই ব্যক্তির মেয়ে কোথায় পড়াশোনা করে? কিংবা তারা কোথাও ঘুরতে গিয়েছিল কিনা! এরপর সম্ভাব্য শিকারীকে ফোন কল বা ভিডিও কল করা হয়। এরপর নিজেদের নামের পাশে কোন সরকারি এজেন্সির লোক কিংবা পুলিশ সিবিআই অথবা নারকোটিক্সের পরিচয় দিয়ে খুব আত্মবিশ্বাসের সাথে নিখুঁতভাবে ভুয়ো অফিসার সাজে।
তারপর ওই সমস্ত প্রতারকরা ভয় দেখাতে থাকে এবং কথার জালে ফাঁসিয়ে প্রচন্ড মানসিক চাপ তৈরি করে। আর তারপর যখন কোন ব্যক্তি ওই প্রতারকদের পাতা ফাঁদে পা দেন তখন তাকে বলা হয় আপনাকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে নইলে গ্রেফতার করা হবে। এদিন মোদি বলেন প্রথম ধাপে এরা তথ্য সংগ্রহ করে, দ্বিতীয় ধাপে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে, ইউনিফর্ম পরা সরকারি অফিসার সেজে কথাবার্তার মাধ্যমে এমন ভয় দেখাবে যে কেউ পরিকল্পনাও করতে পারবে না।
এরপর তৃতীয় পদক্ষেপে তারা ভয়াবহ মানসিক চাপ তৈরি করে। তবে এই পরিস্থিতিতে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী (Narendra Modi)। সেই সাথে এই পরিস্থিতিতে তিনটি ধাপেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মোদির (Narendra Modi) কথায় এই তিনটি পদক্ষেপ হল – ‘থামুন – চিন্তা করুন – পদক্ষেপ নিন।
আরও পড়ুন : এ তো ‘আত্মঘাতী গোল! ‘অনুপ্রবেশ নিয়ে অমিত শাহকে বিঁধলেন কুণাল
তাই প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, ‘যখন আপনার কাছে এই ধরনের ফোন কল আসবে তখন আতঙ্কিত হবেন না। তাড়াহুড়ো করে পদক্ষেপ নেবেন না। প্রয়োজন হলে প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য ওই ফোন কল চলাকালীন সময়ে কল রেকর্ডিং অপশন কিংবা স্ক্রিন রেকর্ড অন করে নিন।’সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী এদিন সতর্ক করেছেন, ‘কোন সরকারি সংস্থা ফোন করে আপনাকে এভাবে হুমকি দেবে না। এই ধরনের হুমকি কল বা ভিডিও কলের মতো কেউ টাকাও চায় না।যদি আপনাকে কেউ এভাবে ভয় দেখান তাহলে বুঝতে হবে কোনো কিছু ভুল হচ্ছে।’
তাই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইন ১৯৩০ ডায়াল করতে অথবা cybercrime.gov.in-এ রিপোর্ট করতে। এইভাবে স্টপ থিংক এন্ড অ্যাকশন এই তিন ধাপে এই ধরনের ডিজিটাল অ্যারেস্ট মোকাবিলা করা সম্ভব বলেই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। এই ধরনের সাইবার ক্রাইম মোকাবিলার জন্য কো-অর্ডিনেশন সেন্টার-ও তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।