বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গে একের পর এক প্রকাশ্যে আবাস দুর্নীতির (Awas Corruption) বহর। কোথাও তালিকা ভরেছে শাসক দলের নেতাদের নাম দিয়ে, তো কোথাও যোজনায় ধরা দিয়েছে মৃত ব্যক্তির নাম। এবার সামনে এল আরেক অবাক করা কাণ্ড। হলদিয়ায় (Haldia) প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রদান করা বাড়িতে গড়ে উঠেছে ঝা চকচকে ওষুধের দোকান। ঘটনা চাউর হতেই শোরগোল পরে গিয়েছে চারিদিকে।
জানা গেছে, হলদিয়া পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম নগর কলোনির বীরাঙ্গনা ব্লকে ঘটেছে এই তাজ্জব ঘটনা। সম্মুখে মার্বেল দিয়ে বাঁধানো ওষুধের দোকান, আর তারই পেছন দিক থেকে উঁকি দিচ্ছে নীল-সাদা রং। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবাস যোজনার একটি বাড়ির ওপর গড়ে উঠেছে ওই ওষুধের দোকান। যার নামে বাড়ি সে নিজে বসবাস না করে বাড়িটি ভাড়া দিয়েছেন। আর সেই বাড়িতেই ভাড়াটিয়া বানিয়েছেন চোখ ধাঁধানো রঙের ওষুধের দোকান।
সূত্রের খবর, ২০১৮-১৯ সালে বাড়িটি বানানোর জন্য সরকার তরফে ওই বাড়ির মালিককে প্রায় তিন লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়। আবাসের উপভোক্তার নাম আরতি প্রধান। যোজনার নিয়মানুসারে বাড়ি পেতে গেলে উপভোক্তার নিজস্ব জায়গা থাকতে হয়। আবাসের আবেদন করার সময় আরতি জানান, সে তিঁনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না, এবং এই জমিটি তাঁর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া। যোজনার ঘর পেলে খুবই উপকৃত হবেন তিঁনি। কিন্তু ঘর পাওয়ার পর তাতে ভাড়া খাটানোর ঘটনা দেখে হতবাক সকলে।
এবিষয়ে স্থানীয় লোকজন জানান, আরতির স্বামী হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা শুভেন্দুর কাছের লোক শ্যামল আদকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেই সুবাদেই তিঁনি এই ঘর পেয়েছেন। অন্যদিকে, এই বিষয়ে অভিযুক্ত আরতি প্রধান বলেন, ‘‘আমার স্বামীর সঙ্গে আমার বনিবনা নেই। আলাদা থাকি। ওই বাড়িটি ভাড়া দিয়ে মাসে যে ছ’হাজার আয় হয়, তার সামান্য অংশ খরচ করে জীবন নির্বাহ করি।’’ অন্যদিকে এই বিষয়ে অভিযুক্তর স্বামীকে ফোন করলে আরতিই সেই ফোন ধরে সাফাই দিয়ে বলেন, ‘‘আলাদাই থাকি। একটি জরুরি প্রয়োজনে দু’জনকেই বাজারে যেতে হয়েছিল।’’
তাজ্জব এই ঘটনা শুনে মাথায় হাত সরকারি কর্তাদেরও। এবিষয়ে, হলদিয়া মহকুমা শাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’ পাশাপাশি হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন , ‘‘উপভোক্তা শ্যামল আদকের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে শুনেছি। ওঁরা নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অযোগ্যদের প্রাপকের তালিকায় রেখেছিলেন।’’ অন্যদিকে ঘটনায় শাসক দলের ওপরই আঙ্গুল তুলে স্থানীয় বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘তৃণমূলের আমলে সবই সম্ভব।’’