বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারি তো বহুপ্রকার শুনেছেন, তবে কখনও জুতো চুরির কেলেঙ্কারি শুনেছেন কী? এবার জুতো চুরির (Shoe Stealing) অভিযোগ উঠল খোদ প্রাক্তন উপ পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে। প্রায় সাত বছর আগের এক কবিতা পাঠের আসর থেকে জুতো চুরির অভিযোগে প্রাক্তন উপ প্রধানকে আদালতে তুললেন পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) কালনার (Kalna) কবি মনোরঞ্জন সাহা।
ঠিক কী ঘটেছিল ২০১৫ সালের সেই কবিতার আসরে? সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা কবি মনোরঞ্জন সাহা ও সেইসময়ের কালনা পুরসভার উপ-পুরপ্রধান সিপিএম (CPM) এর সিদ্ধেশ্বর আচার্য দুজনই এক কবিতা পাঠের আসরে হাজির হয়েছিলেন। আর সেই আসরেই ঘটল বিপত্তি। অনুষ্ঠানের কিছুদিন পরই সিপিএম উপ-পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে জুতো চুরির অভিযোগে সরব হন কবিতা মনোরঞ্জন সাহা। তাঁর অভিযোগ, কবিতা পাঠ শেষে তিঁনি হঠাৎ দেখেন তাঁর জুতো জোড়া নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মেলেনি সেই জুতো। ৩২৫ টাকা দিয়ে নতুন জুতোটি কিনেছিলেন বলেও জানান তিঁনি। এরপর নিজের নতুন জুতো জোড়া না পেয়ে শেষমেষ খালি পায়ে বাড়ি ফেরেন কবি।
তবে এখানেই শেষ নয়, কিছুদিন পর তিঁনি দেখেন তার বন্ধু সেই উপ-পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্য এর পায়ে সেই জুতো জোড়া। তা পায়ে দিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিঁনি। এরপর নিজের চুরি যাওয়া জুতো ফেরত চাইতেই দুই বন্ধুর মধ্যে বচসা শুরু হয়। বহু ঝামেলার পরও জুতো না পেয়ে শেষমেষ কবি অভিযুক্ত চোর বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে লেখেন-“কবির জুতো করলো চুরি/ হাজার ছুতো দিচ্ছে চোর/ পথে ঘাটে চর্চা জোর”। আর এতে পরিস্থিতি আরও বেসামাল।
কবির লেখা সেই কবিতা দেখে রাগে-ক্ষোভে কানলা থানায় দিয়ে ওই কবির বিরুদ্ধে জুতো চোরের অপবাদ দিয়ে তাঁকে গালিগালাজ করছে বলে, কেস করেন উপ-পুরপ্রধান। জুতো চুরির অভিযোগে পাল্টা উপ-পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে এক মামলা করেন কবি। বর্তমানে সেই মামলাই চলছে কালনা মহকুমা আদালতে। এ বিষয়ে কবি মনোরঞ্জন সাহা জানানো, লাখ টাকা খরচ হলেও তিঁনি এই মামলার শেষ দেখে ছাড়বেন। প্রয়োজনে বাড়ি বিক্রি করতে হলেও তিঁনি তাই করবেন। তবে জুতো জোড়া ফেরত চাই তাঁর।
কম নয় প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধানও। তাঁর বক্তব্য, তাঁর সম্ভ্রান্ত পরিবার। জুতো চুরি তাঁর রক্তে নেই। তাঁকে মিথ্যে অপবাদে ফাঁসানো হয়েছে। এতে তার মানহানি ঘটেছে। অন্যদিকে আজব এই মামলা হাতে পেয়ে কবির আইনজীবী জানিয়েছেন, এই রকম জুতো পাল্টাপাল্টি নিয়ে মামলা তিঁনি আগে কখনো লড়েননি। তবে তিঁনি চান তাঁর মক্কেল যেন জুতো জোড়া ফেরত পান।