একদিন আগেই কামড়েছে বিষধর সাপ! মনের জোরে হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা গৌতমের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মাধ্যমিক পরীক্ষা মানেই পরীক্ষার্থীদের মনে থাকে আলাদা একটা উত্তেজনা। জীবনের প্রথম পরীক্ষা দিতে যাওয়ার এই মুহূর্তটা প্রত্যেকে পরীক্ষার্থীর কাছেই স্মরণীয় হয়ে থাকে সারা জীবন। নিজের স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দও থাকে সকলের মধ্যে। তবে, সবার ক্ষেত্রে এই আনন্দ সমান হয় না। যার প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ পশ্চিম মেদিনীপুরের ছাত্র গৌতম ঘোষ।

মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষার ঠিক আগের রাতেই বিষধর সাপের কামড় খায় গৌতম। আর তারপরে পরীক্ষা দেওয়াই রীতিমতো অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তার। তবে, অদম্য সাহস এবং জেদের ওপর নির্ভর করে হাসপাতালের বেডে বসেই বাংলা পরীক্ষা দেয় সে।

সোমবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়ে চন্দ্রকোণা পলাশচাবাড়ি নিগমানন্দ হাইস্কুলের ছাত্র গৌতম ঘোষ। শিক্ষকরা তাকে দেখেই তার অসুস্থতা বুঝতে পারেন। গায়ে হাত পায়ে অসহ্য যন্ত্রণার পাশাপাশি শরীর নীলাভ হয়ে যাচ্ছিল গৌতমের। এমনকি, পরীক্ষাকেন্দ্রে ধীরে ধীরে দুর্বলও হয়ে পড়ছিল সে।

এমতাবস্থায়, শিক্ষকরা তাকে প্রশ্ন করতেই সে জানায় গত রাতে সাপের কামড় খায় সে। এই ঘটনা শুনে স্বাভাবিকভাবে উপস্থিত শিক্ষকরাও চমকে যান। তারপরেই দ্রুত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শ মত চিকিৎসাও চলে গৌতমের।

জানা গিয়েছে যে, গত রবিবার রাতে ঘরে বসেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল গৌতম। সেই সময় হঠাৎই চৌকির নীচ থেকে একটি বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়। এদিকে, এই ঘটনায় তাকে প্রাথমিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল গৌতম। যার ফলে ওই অবস্থাতেই সে চলে আসে পরীক্ষাকেন্দ্রে। স্কুল ড্রেস পরে অ্যাডমিট কার্ড হাতে নিয়ে গৌতম চন্দ্রকোনা জিরাট হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে লেখাও শুরু করেছিল। কিন্তু, তারপরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ছাত্র।

WhatsApp Image 2022 03 07 at 5.29.54 PM
এই প্রসঙ্গে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে BMOH স্বপ্ননীল মিস্ত্রি জানিয়েছেন যে, “বিষধর কোনো সাপই কামড়েছে ওই ছাত্রকে। তবে সেটা কোন সাপ তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা অনুমান করছি সেটি চন্দ্রবোড়া সাপ হয়ে থাকতে পারে।” এদিকে, জীবনের প্রথম পরীক্ষাতেই কার্যত জীবনের সাথেও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে গৌতমকে। বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়েও হাসপাতালের বেডে বসে গৌতম যেভাবে পরীক্ষা দিয়েছে তাতে তাকে বাহবা জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে শুরু করে সহপাঠীরাও।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর