বাংলাহান্ট ডেস্ক : অবেশেষে নাটকের যবনিকা পতন। গ্রেফতার হল বাগুইআটি জোড়া খুন-কাণ্ডের (Baguiati students murder case) মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরি। শুক্রবার সকালেই হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ট্রেন ধরে অন্য রাজ্যে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন সত্যেন্দ্র। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই বিধাননগর পুলিশের বিশেষ একটি দল হানা দেয় হাওড়া স্টেশনে। সাদা পোশাকেই তাঁরা সেখানে হাজির হন। স্টেশনে সত্যেন্দ্র পৌঁছতেই তাঁকে নাটকীয় ভাবে পাকড়াও করে পুলিশ। এই মুহুর্তে তাঁকে বিধাননগর কমিশনারেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
বাগুইআটির দুই ছাত্র অতনু দে এবং অভিষেক নস্করকে হত্যার ঘটনায় সত্যেন্দ্রর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার থেকে এই মামলায় তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তকারীরা জানান, সত্যেন্দ্র বার বার তাঁর সিম কার্ড বদলানোয় তিনি ঠিক কোথায় আছেন কোনওভাবেই তার নাগাল পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা।
বুধবার বাগুইআটির জোড়া খুনের তদন্তভার নেয় রাজ্যের গোয়েন্দা শাখা সিআইডি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করে। সত্যেন্দ্র যে অতিথিশালায় বসে খুনের পরিকল্পনা শুরু করেন, সেখানেও তল্লাশি অভিযান চালায়। পরীক্ষা করা হয় খুনের জন্য ব্যবহার করা গাড়িটিকেও। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হল সত্যেন্দ্রকে।
বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র অতনু এবং অভিষেক। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুই স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হয় গত ২২ অগস্ট। দু’দিন তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। পরিবারের অভিযোগ জানায়, দু’জনকেই অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশের কাছে অতনুর বাবা অভিযোগ করে বলেন, তিনি বেশ কয়েক বার উড়ো ফোনও পেয়েছেন। মুক্তিপণ চেয়ে এসেছে মেসেজও। অপহরণকারীরা নির্দিষ্ট কোনও জায়গা বলেনি। বরং বার বার বদলেছে মুক্তিপণের অঙ্ক।
অভিযোগ পেয়ে গত ২৪ অগস্ট থেকে দুই কিশোরের খোঁজে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে বেশ কিছু তথ্য। পুলিশ জানতে পারে, দুই কিশোরকে অচেনা কেউ নয়, বরং ‘অপহরণ’ করেছে তাদেরই পরিচিত কোনও এক ব্যক্তি। এরপরই সামনে আসে অতনুদের পাশের বাড়ির ‘জামাই’ সত্যেন্দ্র চৌধুরির নাম। জানা যায়, অতনু নিজের বাইক কেনার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল সত্যেন্দ্রকে। সেই বাইক দেখাতেই তাকে ২২ অগস্ট ডেকে পাঠান তিনি। অতনু তার তুতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল বাইক দেখতে। বিধাননগর পুলিশের দাবি, ওই দিন রাতেই খুন করা হয় দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে। পরে গত ২৩ অগস্ট ন্যাজাট থানা এলাকায় এবং ২৫ অগস্ট হাড়োয়ায় উদ্ধার হয় অতনু এবং অভিষেকের দেহ। অবশেষে খুনের ঘটনার ১৮ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হল সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে।