‘চিকিৎসা করাব না, ও মরলে দায় আমরা নেব’, হুংকার এক পুলিস আধিকারিকের! খাকি উর্দির ঔদ্ধত্যে হতবাক মানুষ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : তাঁদের দাবি শুধু একটা চাকরি। এটা তাঁদের প্রাপ্য। সেই দাবিতেই চলছে দীর্ঘ আন্দোলন (TET Agitation)। কিন্তু দিন যত এগোচ্ছে, ততই তাদের চোখেমুখে দেখা দিচ্ছে আশঙ্কা। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লড়াইয়ের জেদ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি আদৌও জুটবে কিনা তা জানেন না কেউই। তাই চলছে দফায় দফায় আন্দোলন। এবার আন্দোলনে পথে নেমে খেলেন পুলিসের কামড়ও। বুধবার এই নিয়েই মধ্যরাত পর্যন্ত উত্তাল হয়ে ওঠে লালবাজার চত্বর।

ওঁরা চেয়েছিলেন শিক্ষক হতে। হতে চেয়েছেন সমাজে ভবিষ্যত গড়ার কারিগর। কিন্তু হকের চাকরির দাবি করার ‘অপরাধে’ শেষে কিনা পুলিসের কামড় খেতে হল চাকরিপ্রার্থীকে। প্রাথমিকে নিয়োগের দাবিতে বুধবার দুপুরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এক্সাইড মোড়। রাত্রে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে লালবাজার চত্বর। বিক্ষোভ চলে শিয়ালদহ স্টেশন জুড়েও। দুপুরে উত্তাল চেহারা নেয় এক্সাইড মোড়। নিয়োগ চেয়ে বাসের চাকার নীচে শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। সরতে না চাওয়ায় টেনে হিঁচড়ে সরানো হয় তাঁদের। ঘটনায় আহতও হন অনেকেই।

এর পরই ওঠে সেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। ক্যামাক স্ট্রিটে আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারী এক মহিলার হাতে কামড়ে দিয়েছেন এক মহিলা পুলিসকর্মী। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই মুহূর্তের ছবিও। তবে অভিযুক্ত ওই পুলিসকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ একবাক্যে অস্বীকার করেছেন। উল্টে পুলিসের অভিযোগ ওই আন্দোলনকারীই নাকি পুলিসকর্মীকে কামড়ে দিয়েছেন। আক্রান্ত অরুণিমা পাল-সহ প্রায় তিরিশজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় হেয়ার স্ট্রিট থানায়।

চিকিত্‍‍সা চেয়েছিলেন অরুণিমা। সূত্রের খবর, হেয়ার স্ট্রিট থানায় অরুণিমাকে আটক করে রাখা হয়। সেই সময় তিনি অসুস্থ বোধ করেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য বারবার পুলিসকে অনুরোধ করেন তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু অরুণিমার চিকিৎসা করাতে রাজি হয় না পুলিস। এর পরের অভিযোগ আরও মারাত্মক। একজন চাকরিপ্রার্থী জানান, ‘একজন পুলিস আধিকারিক বলেন ওঁ যদি মারা যায় সেই দায় আমরা নেব।’ পরে যদিও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয় আক্রান্ত অরুণিমার।

এরপরের ঘটনা লালবাজারের। ৩০ জনকে লালবাজারে নিয়ে যাওয়ার পর আবারও শুরু হয় বিক্ষোভ। অরুণিমা পাল-সহ অন্যদের মুক্তির দাবিতে লালবাজারের বাইরে চলে প্রবল বিক্ষোভ। অবশেষে গ্রেফতার করা হয় অরুণিমা-সহ প্রায় তিরিশ জন বিক্ষোভকারীকে। বিশেষ সূত্রের জানা যাচ্ছে, তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় দায়ের হয়েছে মামলা। কিছু বিক্ষোভকারীকে অবশ্য পরে ছেড়ে দেওয়া হয় শিয়ালদা স্টেশন চত্বরে। অরুণিমার গ্রেফতারির খবর জানতে পেরে চরম উৎকন্ঠায় তাঁর পরিবার। অরুণিমার শারীরিক অবস্থা নিয়েও চরম উদ্বিগ্ন তাঁর স্বামী, সন্তান সহ পরিবারের বাকি সদস্যরাও।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর