বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের বাংলা অনার্সের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর রহস্য মৃত্যুতে (Jadavpur University Student Death) তোলপাড় রাজ্য। কেও যেন খুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যান্ডোরা বক্স! উঠে আসছে র্যাগিং-এর তত্ত্ব! পড়ুয়ার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ক্রমশ্য ঘনীভূত হচ্ছে ধোঁয়াশা।
এই ঘটনায় সর্বপ্রথম গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সৌরভ চৌধুরীকে (Sourav Chowdhury)। এরপর আরও ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চলছে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। আর তাতেই উঠে আসছে শিউরে ওঠার মতো তথ্য। একদিকে মেইন হস্টেলে রক্তাক্ত স্বপ্নদীপের নিথর দেহ! অন্যদিকে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে হোস্টেলে চলছে জিবি’র (জেনারেল বডি মিটিং) নামে পুলিসকে কিভাবে বয়ান দিয়ে বিষয়টা ধামা চাপা দেওয়া হবে, তার পাঠ।
আর গোটা এই ‘প্ল্যান’ এর পেছনে মূল মাথা ছিল ধৃত সৌরভ চৌধুরীর। পুলিশ সূত্রে খবর এমনটাই। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যে তাদের ডাকা হতে পারে ধরে নিয়েই কার্যত মাঝ রাতেই শুরু হয়ে যায় ‘টিউটোরিয়াল’। প্রাক্তনীদের উপস্থিতিতে চলে ‘মক ইন্টারোগেশন’ হয়। সেই অভিশপ্ত রাতে ৩টি জিবি বৈঠক হয়।
আরও পড়ুন: হোক CBI বা NIA তদন্ত! ‘কেও দায়িত্ব এড়াতে পারে না’, যাদবপুর কাণ্ডে শেষ দেখার হুঙ্কার শুভেন্দুর
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে সব হোস্টেলের ছাত্ররাই বলেন, ‘আমরা জিবিতে ছিলাম। সেখানে ১৫ আগস্টের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল।’ এই শুনেই তদন্তকারীদের মনে সন্দেহ জাগে। শেখানো কথার বাইরে কেউ কিছু বলবে না বলেই জিবিতে স্থির হয়।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের প্রাক্তন কর্তাকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার হুঁশিয়ারি বিচারপতির! যা হল এজলাসে..
ওদিকে জম্মু থেকে পড়তে আসা ধৃত আরিফ স্বপ্নদীপকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এ কথাও মানতে রাজি নন তদন্তকারীরা। সবটাই সাজানো বলে জানতে পারে পুলিস। কারণ পুলিশ সূত্রে খবর, সেই রাতে হস্টেলের ৬৮, ৭৫ ও ৭৩ নম্বর রুমে মৃত পড়ুয়ার উপর যে মানসিক অত্যাচার চলছিল, সেখানেই আরিফও উপস্থিত ছিল।
ধৃতদের গতকাল আলিপুর আদালতে তোলা হলে সরকারি পক্ষের আইনজীবী জানান, ধৃতদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আরিফ আবার জম্মুর বাসিন্দা।’ আপাতত ছ’জনকেই ২৮ আগস্ট পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রহস্যের কিনারা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক, ছাত্র, আবাসিকদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।