বাংলাহান্ট ডেস্ক : এককালে তাঁর রাজনৈতিক পথচলা শুরু হয়েছিল কংগ্রেসের কাউন্সিলর হিসেবে। তারপর তৃণমূলে যোগ দিয়ে তৃণমূল বিধায়ক, শেষ পর্যন্ত বিজেপি সাংসদ। তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের হয়ে মাঠে নেমেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। কথা হচ্ছে ব্যারাকপুরের নেতা অর্জুন সিংকে নিয়ে। আপাতত তাঁরই ‘ঘরে ফেরার’ পদধ্বনিতে মুখরিত বঙ্গ রাজনীতির আকাশ বাতাস। তিনি তৃণমূলে ফিরছেন কি না, তাও জানা যাবে আজকেই। এহেন অবস্থায় রইল অর্জুন সিংয়ের রাজনৈতিক জীবনের ঝাঁকিদর্শন।
১৯৬২ সালের ২ এপ্রিল তাঁর জন্ম হয় এক আপামর রাজনৈতিক পরিবারেই। বাবা সত্যনারায়ণ সিং ছিলেন ব্যারাকপুর বিধানসভায় কংগ্রেসের তিনবারের বিধায়ক। এহেন পরিবারে এবং পরিবেশে বড় হয়ে ওঠার কারণেই অতি অল্প বয়স থেকে রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকেন তিনি। নৈহাটির ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হলেও সক্রিয় রাজনীতির কারণেই অচিরেই ঘুচে যায় সেসব। এরপর বেশ কিছুদিন তিনি কাজ করেন জুট মিলেও।
১৯৮৫ সালে প্রথমবার ভাটপাড়া পুরসভা নির্বাচনে তিনি লড়েন কংগ্রেসের টিকিটে। জিতে কাউন্সিলরও হন। ১৯৯৮ সালে যখন কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন তখন থেকেই সেখানে অর্জুন সিং। ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ভাটপাড়া থেকেই তাঁকে টিকিট দেয় তৃণমূল। সেবারই সিপিএম প্রার্থী রামপ্রাসাদ কুন্ডুকে পিছনে ফেলে বিধানসভায় পদার্পণ করেন তিনি। পরপর চারবার জিতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি ভাটপাড়ার বিধায়ক পদেই ছিলেন। একই সঙ্গে ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল অবধি ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যানও।
তৃণমূলে থাকাকালীন কার্যতই দাপুটে নেতা হয়ে ওঠেন অর্জুন। তৃণমূলের হিন্দি ভাষী শাখার সভাপতি করা হয় তাঁকে। উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পাঞ্জাব এই চার রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাঁকেই। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই তৃণমূলের সঙ্গে শুরু হয় তাঁর ঝামেলা। গুঞ্জন শোনা যায়, লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়েই দলত্যাগী হন অর্জুন। পদ্মশিবিরে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত লোকসভার টিকিট পেয়েই সেবারই ব্যারাকপুরের সাংসদ হন তিনি। ওদিকে ভাটপাড়া বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন অর্জুন পুত্র পবন সিং। কিন্তু এরই মধ্যে এবার বিজেপির অন্দরে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন অর্জুন। তুঙ্গে উঠেছে তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা। এবার আজই তিনি যোগ দেন কি না ঘাস ফুল শিবিরে সেটাই দেখার।