Bangla Hunt Desk: আলু (Potato), খাদ্যশস্যের মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি সবজি। তরকারিতে আলু ছাড়া রান্না প্রায় অসম্ভবই। পশ্চিমবাংলাতেও প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে আলুর উৎপাদন হয়। যা অন্যান্য রাজ্যেও রপ্তানি করা হয়। তবে আজকে আমরা এই আলুর বিষয়ে এমন একটি দুঃখজনক কাহিনী সম্বন্ধে জানব, যা শুনে চোখে জল চলে আসবে আপনারও।
আয়ারল্যান্ডের দুর্ভিক্ষ
১৮৪৫ সাল, তখন আয়ারল্যান্ডে (Ireland) রানী ভিক্টোরিয়ার শাসন চলছে। সেইসময় আলুর ফলনের সময় P. infestans নামক এক বিশেষ রোগ, আলুর ফলন পুরোপুরি নষ্ট করে দেয়। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চলে তাঁদের এই খারাপ সময়। ফসলের অভাবে অনাহারে তাঁদের দিন কাটতে থাকে আয়ারল্যান্ডবাসীর। এইভাবে ১৮৫২ সাল পর্যন্ত ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয় আয়ারল্যান্ডবাসীরা।
এইসময় প্রায় ১০ মিলিয়ন আইরিশ মানুষ অনাহারে না খেয়ে এমনকি কেউ কেউ খিদের জ্বালায় ওই খারাপ আলু খেয়ে প্রাণ হারায়। এইভাবে চলতে চলতে আইরিশ নেতারা রানী ভিক্টোরিয়ার কাছে কর্ন আইন প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন। আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর শস্যের দাম কমলেও, খাদ্যকষ্ট থেকেই যায়।
জীবনযাপনে পড়ে খারাপ প্রভাব
আয়ারল্যান্ড তখন একটি কৃষিপ্রধান দেশ ছিল। সেখানকার মানুষেরা আলুর উৎপাদন ছাড়া অন্য কোন ফসল ফলাতে জানতেন না বা অর্থের অভাবে কিনতেও পারতেন না। তাই এই দুর্ভিক্ষের সময় প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ ওই খারাপ আলু খেয়েই জীবন অতিবাহিত করতেন। এই দুর্ভিক্ষের ফলে তাঁদের জীবনযাপনে বিরাট প্রভাব পড়ে। প্রায় ২৫ শতাংশ জনসংখ্যা কমে যায়।
সাহায্য পাঠায় আদি আমেরিকানরা
আয়ারল্যান্ডের এই আলুর দুর্ভিক্ষের সময়, আদি আমেরিকান লোকেরা তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। ১৮৪৭ সালে তারা আইরিশ মানুষদের দুর্ভিক্ষের কথা জানতে পেরে অর্থ একত্রিত করে ১৭০ ডলার অর্থ সাহায্য পাঠিয়েছিল। দুর্ভিক্ষের সময়ে আদি আমেরিকানদের এই সাহায্য আজও ভুলতে পারেনি আয়ারল্যান্ডবাসীরা। তাই বর্তমানে করোনা আবহে এবার আদি আমেরিকানদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে আয়ারল্যান্ডবাসীরা।