বাংলাহান্ট ডেস্ক : তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের একরকম ভাতঘর হয়ে গেছে নিজাম প্যালেস। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় একাধিকবার সিবিআই দফতরে সমন করা হয় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এর সঙ্গেই ডেকে পাঠানো হয় অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা বীরভূমের লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা এবং পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শাহানওয়াজ হোসেনকে। আজ দুর্গাপুরের এনআইটি গেস্ট হাউসে সিবিআই-র অস্থায়ী দফতরে সকাল ১০টা নাগাদ হাজিরা দিতে বলা হয় তাঁদের। হাজিরা দিতে আসেনও তাঁরা। প্রায় দেড় ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সাড়ে ১১টা নাগাদ বেরিয়ে যান উভয়ই।
গোপন সূত্রে খবর, শাহানওয়াজ হোসেনকে গত ২৮ মে সিবিআই দফতর থেকে ফোন করা হয়। তখনই তাঁকে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়। তবে কী কারণে ডাকা হয়েছে সেই সম্পর্কে এখনও কিছু বলেননি ওই তৃণমূল নেতা। তবে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে ফোন কল সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে জানতেই ডেকে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।
এই বিষয়ে শাহানওয়াজ বলেন, ‘আমাকে ২৮ তারিখে সিবিআইয়ের তরফ থেকে ফোন করা হয়। বলা হয় দেখা করার জন্য। কয়েকটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আছে। তবে কী কারণে ডেকেছে এখনও জানি না। দরকার পড়লে অবশ্যই ডাকবে। বীরভূম জেলার অনেককেই ডাকা হয়েছে। আমার বাড়ি বীরভূমে। তবে আমি বর্ধমানের এমএলএ। দেখা করতে বলেছে। আমিও দেখা করলাম।’
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই জেলায় জেলায় ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দা আধিকারিকরা। ইলামবাজারের বিজেপি নেতা খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সেই তালিকায় রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতির মৎস কর্মাধ্যক্ষ সহ আরএ বেশ কয়েকজন স্থানীয় তৃণমূল নেতাও আছেন।
সূত্রের খবর, এবার গৌরব সিনহা খুনের ঘটনায় আরও এক তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসকেও একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদ সেরে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক নিজেই জানিয়েছেন, ইলামবাজারের ঘটনার জন্যই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন ২ মে ইলামবাজারে বিজেপি কর্মীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। সেই বিষয়ে তদন্তে নেমেই সিবিআই গোয়েন্দাদের কাছে অনুব্রত মণ্ডলের নাম উঠে আসে। এর পরই তাঁকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় পঞ্চমবার তলবের পর বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মত এদিন নির্ধারিত সময়ের আগে সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা।