বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ কেলেঙ্কারির তদন্তের মাঝেই ২০২৩ এর প্রথম দিকে আবাস দুর্নীতি (Awas Scam) নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। অভিযোগ ওঠে যাদের পাওয়ার কথা তাদের বঞ্চিত করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অবৈধ উপায়ে বহু জনকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর (Pradhan Mantri Awas Yojana) দেওয়া হয়েছে। গোটা রাজ্যে দিকে দিকে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষজন। যদিও বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। তবে এরই মধ্যে ফের দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) মথুরাপুরের ঘটনা সামনে আসতেই তোলপাড়।
আবাস কেলেঙ্কারিতে ‘থ’ সকলে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক বাসিন্দা আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ ছিল যাদের নিয়ম ভেঙে টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের সেই টাকা ফেরত নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ঝুলিয়ে রাখছে কেন? রাজ্যপালেদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি! কেন্দ্রের জবাব তলব করল SC
২৯ এ ২৭ ই ‘ভুয়ো’
বিচারকের নির্দেশের সঙ্গে ২৯ জনের তালিকা আসে জেলা শাসকের দফতরে। এরপর নাম ধরে ধরে সেই ২৯ জনের আর্থিক সমীক্ষা করতেই চোখ কপালে। তদন্তে বিডিও সাহেব দেখেন, তালিকায় থাকা ২৯ জনের মধ্যে ২৭ জনই ভুয়ো। যার মধ্যে আবার ৩টি অ্যাকাউন্ট বেনামি। শুধু তাই নয়, সেই তালিকায় নগেন্দ্রপুর তৃণমূল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের শ্বশুরেরও নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার ED-কে নোটিস ইস্যু করল সুপ্রিম কোর্ট, কারণ ঘিরে তোলপাড়
টাকা ফেরানোয় ৭ দিনের ‘ডেডলাইন’
কারচুপি ধরা পড়তেই ওই ২৭ জন অভিযুক্তদের প্রত্যেককে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত টাকা ফেরত দেওয়ার নোটিশ ধরান বিডিও। জানা গিয়েছে, গত নভেম্বর মাসে এই ২৯ জনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কিস্তির ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে জমা পড়েছে। এই আবহে অভিযোগ সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়।
আবাস যোজনায় বঞ্চনার অভিযোগ তুলেই ধর্নায় বসেছিল তৃণমূল
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে তৃণমূলের ধর্নায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজধানীর (Delhi) মাটি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আবাস যোজনার টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে এবং বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে পৌঁছে যায় বাংলার শাসকদল। দলের সমস্ত সাংসদকে একজোট করে দুদিন ব্যাপী ধর্নায় বসেছিলেন তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যা নিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজনীতির ময়দান। যদিও কেন্দ্রের পাল্টা দাবী, দুর্নীতি হয়েছে বলেই টাকা বন্ধ হয়েছে। এবার কেন্দ্রের সেই দাবির পক্ষেই যেন প্রমাণ জুড়ে দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই ঘটনা।