‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’র লোগো দেওয়া বোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক, রাজ্যকে ৫৮০ কোটি দিয়ে শর্ত কেন্দ্রের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বছর ঘুরতেই পঞ্চায়েত ভোট (Panchayet Election)। এদিকে ইতিমধ্যে রাজ্যের নানা প্রান্তে গ্রামের রাস্তাগুলির বেহাল অবস্থার ছবি উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমের পর্দায়। কোথাও খানা-খন্দে ভরা রাস্তা চলার অযোগ্য হয়ে উঠেছে, কোথাও বা রাস্তা এতটা খারাপ হয়ে গিয়েছে যে তা একেবারে ব্যবহারই করা যায়না। এরইমধ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড় লক্ষ্মীলাভ হল রাজ্য সরকারের। গ্রামীণ রাস্তার জন্য ৫৮৪ কোটি টাকা পেল রাজ্য।

কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রকের অধিকর্তা দেবেন্দ্র কুমার রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিবকে ১৪৪টি রাস্তা নির্মাণের অনুমোদনের কথা জানান। যার প্রতি কিলোমিটার নির্মাণ খরচ হবে ৬৮ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। আর সেখানেই বলা হয় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা নির্দেশিকা মেনেই এই রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। নির্মাণের পর মানুষকে অবগত করতে, ওই রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা লোগো দেওয়া বোর্ড লাগাতে হবে।

এরই সাথে স্থানীয় সাংসদ বা এমপি-কে প্রকল্পের কাজে যুক্ত করতে হবে। তাঁদের দিয়েই উদ্বোধন করাতে হবে রাস্তা। এ ছাড়াও এই রাস্তাগুলি নির্মাণের পর রাস্তার দু’ধারে বাধ্যতামূলকভাবে ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের মাধ্যমে ফল বা অন্য ধরনের গাছ লাগাতে হবে। এ ছাড়াও গুণগত মান রক্ষায় নির্মাণ সংক্রান্ত গাইড লাইনও মানতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে।

অনলাইন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম যে ১৪৪টি রাস্তার তালিকা দেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র সেই রাস্তাগুলিই নির্মাণ করা যাবে। অন্য কোনও রাস্তা নির্মাণ করা যাবে না। রাজ্যকে ওই রাস্তা নির্মাণে রোড সেফটি অডিট রিপোর্টকে দাখিলও করতে হবে। কাজ করতে হবে সময় বেঁধে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে একাধিক শর্ত রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিবকে দেওয়া হয়েছে।

তবে আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নাম করার লোগো ব্যবহারে আপত্তি রয়েছে রাজ্যের। এ দিনের এই চিঠির পরে অবশ্য তৃণমূল সরকারের পক্ষ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় উঠে এসেছে। অন্যদিকে, স্থানীয় সংসদদের এই কাজে যুক্ত করা কথা বলায় রাজ্যে বিজেপি সাংসদদেরও যুক্ত করতে হবে বলেই মনে করছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহল।

এ দিকে বিজেপির অভিযোগ, প্রকল্পের কাজের সময়ে এতদিন কোনও মতামত নেওয়া হয়নি। তবে কেন্দ্রের এই নির্দেশিকার পর রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের এই চিঠির পর রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের তরফে কি নির্দেশিকা দেওয়া হয়, তা ঘিরেই কৌতুহল তুঙ্গে।

কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয় রাস্তা নির্মাণে কেন্দ্র দেবে ৩৪৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা। রাজ্যকে দিতে হবে ২৪১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্র দেবে ৬০% এবং রাজ্য দেবে ৪০ শতাংশ টাকা। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার টাকা কেন্দ্রের তরফে আসার পর এ বার ১০০ দিনের গ্রামীন কর্মসংস্থান প্রকল্পেও কেন্দ্রের পক্ষ কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাই এখন দেখার বিষয়।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর