বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গে প্রথম দফার ভোটের মধ্যে সকাল সকাল রাজ্য রাজনৈতিক মহলে একটি অডিও টেপ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই অডিও টেপ এমনই বিস্ফোরক ছিল, যা সরাসরি তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। উল্লেখ্য, ওই অডিও টেপে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক বিজেপি নেতাকে ফোন করে ওনার হয়ে কাজ করার আবেদন করেন এবং ওনাকে নন্দীগ্রামে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
তবে বিজেপির জেলা সহসভাপতি প্রলয় পাল তৃণমূল নেত্রীর অনুরোধ রাখতে পারেন নি। তিনি ফোনের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। বিজেপি নেতা প্রলয় পাল বলেন, ‘আমার রক্তে বেইমানি নেই। আমি দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করি আর এই দলের জন্য প্রাণ দিতে পারি।” প্রলয় পাল এও বলেন যে, ‘শুভেন্দু অধিকারী আমার প্রার্থী, আর ওনাকে জিতিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক করব।”
উল্লেখ্য, তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহসভাপতি প্রলয় পাল এই দলবদলের মরসুমে বিজেপিতে যোগ দেন নি। ২০১১ সালে বাংলার পরিবর্তনে সামিল ছিলেন তিনি। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ওনার দলের প্রতি ভক্তি কমতে থাকে আর ২০১১ সালেই তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। প্রলয় পাল যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন শুধু পূর্ব মেদিনীপুরই না গোটা রাজ্যে বিজেপির হাতে গোনা কিছু নেতা ছিল মাত্র। তিনি ক্ষমতার লোভে যে বিজেপিতে যোগ দেন নি সেটা স্পষ্ট।
শুভেন্দু অধিকারী গতবছর ডিসেম্বর মাসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আর এরপর থেকে তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতারা এমনকি স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলবদলুদের বিশ্বাসঘাতক, মীরজাফর বলে সম্বোধন করেছেন। আর সেই মীরজাফর, বিশ্বাসঘাতকদের থেকে কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাহায্য চাইলেন সেটা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, প্রলয় পাল দশ বছর আগে তৃণমূল ছাড়ার আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুরতর অভিযোগ করেছিলেন। তিনি তৃণমূল শাসিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুশ চুরির অভিযোগ করেছিলেন। গতকাল একটি ভিডিও বার্তায় প্রলয় পাল আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেছিলেন, যখন চুরি নিয়ে অভিযোগ করেছিলাম তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার খবর নেন নি। আর এখন আমার খবর নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, প্রলয় পাল যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করেছিলেন, তখন নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই সময় হোক আর তাঁর পরের দশ বছর, প্রলয়বাবু শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একটিও বাক্য খরচ করেন নি। উল্টে তিনি বলেছিলেন, তৃণমূলে একটাই পোস্ট আর বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট। প্রলয় পাল অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ ৪০ বছরের সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছিলেন শনিবার।
তিনি অধিকারী পরিবারের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, যখন নন্দীগ্রামের মানুষ সিপিএমের হাতে অত্যাচারিত হত, তখন এই অধিকারী পরিবারই সবার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আর এরজন্য তিনি চির কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবেন বলে জানিয়ে দেন।