বাংলাহান্ট ডেস্কঃ গত সোমবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ওড়িশার (Odisha) প্রমোদিনী রাউল (Pramodini Roul) এবং মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ সরোজ কুমার সাউ (Saroj Kumar Sahu)। আর পাঁচটা সাধারণ বিয়ের থেকে তাদের বিয়েটা কিছুটা আলাদা হওয়ায় সকলের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। এই নব দম্পতিকে অনুষ্ঠানে আগত সকলেই দুহাত ভরে তাদের সুন্দর জীবনের আশির্বাদ করেছেন।
আসলে, সরোজ পেশায় একজন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ। কিন্তু প্রমোদিনী অ্যাসিড অ্যাটাকের শিকার হওয়া এক মেয়ে। ২০০৯ সালের ১৮ ই এপ্রিল প্রমোদিনীর উপর অ্যাসিড অ্যাটাক করা হয়েছিল। প্রমোদিনীর মুখটা পুরো পুড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দৃষ্টি শক্তিও ৮০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে সে ভালোভাবে চোখে দেখতেও পেত না।
এইভাবে জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে টানা ৫ বছর ২০১৪ সাল অবধি বিছানায় শুয়ে ছিলেন প্রমোদিনীর। এরপর তাঁর চিকিৎসা চলাকালীন কটকের একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে সরোজের সঙ্গে দেখা হয় প্রমোদিনীর। পেশায় একজন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ায় সরোজ খুব দ্রুতই প্রমোদিনীর কাছাকাছি চলে আসে।
দুজনের মধ্যে খুব সুন্দর একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায়। ধীরে ধীরে এই নতুন বন্ধুর ছোঁয়ায় আবারও স্বাভাবিক জীবন ফেরার চেষ্টা করে প্রমোদিনী। এমনকি চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, অ্যাসিড অ্যাটাকের কারণে প্রমোদিনী হয়ত আর আগের মতন হাঁটাচলা করতে পারবেন না। কিন্তু মাত্র ৪ মাসের মধ্যে প্রমোদিনীকে সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলেন সরোজ। এমনকি নিজের চাকরীও ছেড়ে দেন প্রমোদিনীকে সুস্থ করার জন্য।
এইভাবে চলতে চলতে ২০১৬ সালের ১৪ ই জানুয়ারি তারা তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একে অপরকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। গত সোমবার তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের শুভ সূচনা হয়। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন প্রমোদিনী এবং সরোজ।
https://www.facebook.com/ANINEWS.IN/photos/pcb.3646117278834342/3646116708834399/
প্রমোদিনী জানায়, ‘আমি গত ২০০৯ সালের ১৮ ই এপ্রিল অ্যাসিড অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলাম। আমার স্বামীর সঙ্গে আলাপ করুন। ওঁ সরোজ, ২০১৪ সালে চিকিৎসারত অবস্থায় ওঁর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমার এই জার্নিতে ওঁ আমাকে অনেক সাহায্য করেছে, পাশে থেকেছে’।