বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে তোলপাড় হয়ে পড়েছে দেশের রাজনীতি। প্রতি মুহূর্তেই পিকের এমন কোনো মন্তব্য জনসমক্ষে এসে পৌঁছায়, যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। কখনো কংগ্রেসে যোগদান প্রসঙ্গে মতপ্রকাশ তো আবার কখনো দেশে তৃতীয় বা চতুর্থ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা, একাধিক সময়ই খবরের শিরোনামে থাকেন তিনি। সম্প্রতি, দেশে মেরুকরণ নিয়ে মুখ খোলেন এই ভোটকুশলী আর এবার প্রকাশ্যে বিজেপির এক নেতার প্রশংসা করে বসলেন পিকে, যা নিয়ে আবারো একবার জলঘোলা শুরু হয়েছে।
এদিন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানির ভরপুর প্রশংসা করেন প্রশান্ত কিশোর। এদিন পিকেকে প্রশ্ন করা হয় যে, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কাকে তিনি সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করেন? সেই প্রশ্নের জবাবে প্রথমে মহাত্মা গান্ধীর নাম করলেও পরে জীবিত রাজনীতিকের নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তাঁকে। এমন সময় তিনি বলেন, “তাহলে আমি বলবো লালকৃষ্ণ আদবানির নাম। ওঁনাকে আমি শ্রদ্ধা করি। বর্তমানে সর্বভারতীয় দল বিজেপির প্রতিষ্ঠার পিছনে আসল কারিগর তিনি।”
অতীতেও বিজেপি সম্পর্কে ভালো কথা বলতে শোনা গেছে পিকেকে। তিনি বলেন, “আগামী সময়ে বিজেপি শক্তিশালী দল হিসেবে রাজ করবে। দেশে মোটামুটি 30% ভোট যদি কোনো দল নিশ্চিত করে, তবে সেই দল শক্তিশালী হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়। আমার মনে হয়, আগামী 20-30 বছর রাজনীতি বিজেপিকে ঘিরেই আবর্তিত হবে।”
সম্প্রতি দেশে মেরুকরণ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, “দেশের মেরুকরণকে বাস্তবের তুলনায় এই মুহূর্তে অনেক বাড়িয়ে জাহির করা হচ্ছে। 15 বছর আগে যেভাবে মেরুকরণ করা হত, তা বর্তমানে অনেকটাই বদলে গেছে। তবে এটা বলতেই হবে যে, এর প্রভাব রয়ে গেছে এখনো! কোনো দল কখনোই দেশে কোন ধর্ম কিংবা সম্প্রদায়ের 50 থেকে 55 শতাংশ ভোট অর্জন করতে পারেনি।”
এছাড়াও তিনি বলেন, “দেশে ভোটের পরিসংখ্যান বলছে যে, বিজেপি দল সমগ্র জনসংখ্যার মাত্র 38 শতাংশ ভোট পায়। সদ্য উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপি 40 শতাংশ ভোট পেয়েছিলো। কিন্তু আপনারা জানেন, সেখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় 80 থেকে 82 শতাংশ হিন্দু সম্প্রদায়। তাহলে এর অর্ধেকেরও কম ভোট কেন বিজেপি পেল? এর থেকে বোঝা যায় যে, মেরুকরণের প্রভাব এখনো বর্তমান থাকলেও এটি ভোটে জেতা বা হারাকে পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারে না।”
এছাড়াও কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে যখন গোটা দেশ তাকিয়ে ছিলো পিকের দিকে, সেই মুহূর্তে কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করে দেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে জানান, “আমার মনে হয় না কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার দরকার রয়েছে। যে সকল কাজ করতে হবে ওদের, তা করার জন্য দলে অনেক অভিজ্ঞ নেতা রয়েছেন, আমি যোগ না দিলেও হবে।”
এরপরেই একপ্রকার বোমা ফাটিয়ে তিনি তৃতীয় ফ্রন্টের তথা দেশে মমতা কিংবা অন্যান্য আঞ্চলিক দলের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। পিকে জানান, “দেশে যদি বিজেপিকে হারাতে হয়, তাহলে দ্বিতীয় ফ্রন্টই ভরসা। কোনো তৃতীয় বা চতুর্থ ফ্রন্ট দিয়ে শাসক দলকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। আমরা যদি বিজেপিকে প্রথম ফ্রন্ট বা মোর্চা হিসেবে ধরি, তাহলে দ্বিতীয় ফন্ট হিসেবে কোনো দলকেই তাদের অবস্থান মজবুত করে তুলতে হবে। তবেই 2024 সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করার কথা ভাবা যেতে পারে।”