বাংলাহান্ট ডেস্ক: পুরভোটের মুখে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদের জল্পনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন আইপ্যাক কর্তা প্রশান্ত কিশোর। একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে মমতার সঙ্গে তাঁর মনকষাকষি নিয়ে সমস্ত জল্পনায় কার্যতই জল ঢাললেন তিনি।
সাক্ষাৎকারটিতে মমতা এবং তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাফ জানান, ‘ওই সব খবর দেখে আমি শুধু হেসেছি। আমার সঙ্গে দিদির সম্পর্ক যেমন ছিল ঠিক তেমনই আছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে তো কিছু একটা করতে হবে। তাই হয়ত এই সব করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে বলা হল, দিদি এবং আমার মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার পর বলা হল, দিদি আর অভিষেকের মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তারপর আবার বলা হল,অভিষেক এবং আমার দুজনের সঙ্গের দিদির সমস্যা এবং মতানৈক্য হয়েছে। তিনি দলের সর্বোচ্চ নেত্রী হিসেবে দলের সংগঠনকে নতুন করে সাজাচ্ছেন। তা নিয়েও সংবাদমাধ্যমে গিমিক তৈরি করা হল।’
তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কে কোনও আঁচড়ই লাগেনি। এই দাবিই করতে দেখা যায় আইপ্যাক কর্তাকে। এক্ষেত্রেও সবই ‘গুজব’ এই তত্ত্ব খাড়া করে তিনি দুষেছেন সংবাদমাধ্যমকে। তাঁর কথায়, ‘সংবাদমাধ্যম প্রশ্ন করে, মমতার সঙ্গে সম্পর্ক কি আগের মতোই আছে? নীতীশ কুমারের সঙ্গে কি সম্পর্ক আগের মতো আছে? অমরেন্দ্র সিংহের সঙ্গে সম্পর্ক কি আগের মতো আছে? এমন সব প্রশ্ন কেন আসে আমি বলতে পারব না। গত ১০ বছরে আমি একাধিক ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করেছি। সব সময় সম্পর্ক নষ্ট হয় না। আমারও কোনও সম্পর্ক নষ্ট হয়নি।’
রাজ্যে পুরভোটের আগেই প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে চরমে উঠেছিল তৃণমূল এবং আইপ্যাক ‘দ্বন্দ্ব’। তৃণমূল নেতাদের একাংশের মুখে শোনা যায় আইপ্যাককে কেন্দ্র করে ক্ষোভের কথাও। এমনকি জানা যায় খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেসেজ করে পিকে জানিয়েছিলেন ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করতে চায় না তাঁর সংস্থা। এরপর এই দ্বন্দ্বকে নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি তাঁকে। কোনও মন্তব্য আসেনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেও। এই প্রথমবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন আইপ্যাক কর্তা। তাঁর এহেন বক্তব্যের পর, তবে কি মিথ্যে বলছিলেন সেই সমস্ত বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা, উঠছে এই প্রশ্নই।