বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিহারের (Bihar) রাজনীতিতে একের পর এক নাটক অব্যাহত। একদিকে পুরানো সঙ্গীদের হাত ছেড়ে দেওয়ার কারনে নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) দল জেডিইউয়ের (JDU) সঙ্গে সম্পর্ক একপ্রকার সাপে-নেউলে হয়ে গিয়েছে বিজেপির (Bharatiya Janata Party), আবার অপরদিকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে একের পর এক কটাক্ষ ছুড়ে চলেছেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)।
নীতীশ বনাম পিকে দ্বন্দে ক্রমাগত উত্তপ্ত হয় চলেছে রাজনৈতিক পারদ আর এবার পুনরায় একবার সেই বিতর্ক আরো উস্কে দিলেন প্রশান্ত কিশোর। উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে আরজেডি এবং কংগ্রেসের হাত ধরে ফের একবার ক্ষমতায় আসেন নীতীশ কুমার। একদিকে যখন তাঁর এই কর্মকাণ্ডের জন্য আক্রম শানিয়ে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি, তো অপরদিকে নীতীশ-পিকে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব চরমে।
উল্লেখ্য, অতীতে নীতীশের JDU-তে থাকলেও বর্তমানে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে ব্যস্ত পিকে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রশান্ত কিশোর আমাদের দলকে কংগ্রেসের সাথে মিশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আসলে ও এখন বিজেপির সঙ্গে কাজ করে চলেছে।”
পরবর্তীতে বিহারে ‘জন সুরাজ’ পদযাত্রায় যোগদান করার মাধ্যমে নীতীশের এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি বলেন, “নীতীশ কুমারের উপর বয়স ধীরে ধীরে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। কখনো বলছে, আমি বিজেপির হয়ে কাজ করছি। আবার কখনো বলছে, ওদের দলকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যেতে পরামর্শ দিয়েছি। আমি যদি বিজেপির হয়ে কাজ করি, তাহলে কংগ্রেস এবং জেডিইউকে কেন মিলিত হতে বলবো?”
পরবর্তীতে তিনি বলেন, “আসলে বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে নীতীশ কুমার বেশ কিছু মানুষদের চারপাশে রয়েছেন, যার দরুণ তিনি নিজের ওপর বিশ্বাস হারাচ্ছেন। সেই কারণে ভীত হওয়াতেই এ সকল মন্তব্য করে চলেছেন।”
উল্লেখ্য, জন সুরাজ কর্মসূচি চলাকালীন রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে পথযাত্রায় সামিল হয়ে চলেছেন প্রশান্ত। গতকাল পশ্চিম চম্পারণ জেলার ধানাউজি এলাকায় পৌঁছে গিয়ে সেখানকার মানুষদের সঙ্গে অভাব এবং অসুবিধার কথা আলোচনা করেন পিকে। পরবর্তীতে তিনি দাবি করেন, “নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখে চলেছেন।”
প্ৰশান্ত কিশোর আরও বলেন, “লালুজির ছেলে নবম শ্রেণী পাশ করেছে। অথচ তিনি বর্তমানে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, অথচ সাধারণ মানুষের ছেলেমেয়েরা পিওনের চাকরি পর্যন্ত পায় না। এক্ষেত্রে নেতা মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েদের জন্য তাদের বাবা-মা রয়েছে, কিন্তু সাধারণ মানুষকে ভাগ্যের উপর ভরসা করে থাকতে হচ্ছে।” ফলে একদিকে নীতীশ কুমার, আবার অপরদিকে লালুপুত্র তেজস্বী! সবমিলিয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে পিকের এসকল বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে নাটকীয় মোড় আনতে চলেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।