বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেখতে দেখতে কেটে গেল একটা দিন। বৃহস্পতিবার সকালেই এসে পৌঁছেছিল খারাপ খবরটা। অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee) আর নেই। শোক প্রকাশ করতে বাকি রাখেননি টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রায় কেউই। দীর্ঘদিন বড়পর্দা থেকে দূরে ছিলেন অভিষেক। টেলিভিশনকেই আপন করে নিয়েছিলেন। পালটা ছোটপর্দাও তাঁকে দু হাত ভরে দিয়েছিল। অভিনেতার প্রয়াণের পর তাঁর সঙ্গে এমনি কিছু স্মৃতি নিয়ে মুখ খুললেন প্রতীক সেন (Pratik Sen)।
‘মোহর’ সিরিয়ালের শঙ্খ বললেই যদি উঠে আসে প্রতীকের নাম, তবে আদি রায়চৌধুরী বললেই উঠে আসবে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের নাম। বাবা ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করতেন দুজনে। সম্পর্কটা কখন যেন পর্দা ছাড়িয়ে বাস্তবেও পৌঁছে গিয়েছিল। অনস্ক্রিন বাবার মৃত্যুতে অঝোরে কেঁদেছেন প্রতীক।
জানালেন, বুধবার ‘ইসমার্ট জোড়ি’র শুটিং করতে করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অভিষেক। অমন কাজপাগল মানুষটাও নিজেই বলেছিলেন, আর পারছেন না। বাড়ি যাবেন। তখন ছেলে প্রতীক মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার কিন্তু তাঁর সঙ্গে একটি বড় দৃশ্য আছে।
কে ভেবেছিল তখন সেটাই শেষ দেখা? বৃহস্পতিবার খবরটা শুনেই যেন পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল প্রতীকের। একছুটে পৌঁছে গিয়েছিলেন অভিনেতার বাড়ি। তাঁকে দেখেই উপস্থিত ইন্দ্রাণী হালদার, লাবণি সরকার রা বলেন, প্রতীক তো বাস্তবেও অভিষেকের ছেলের মতোই ছিল। তিনিই শেষ সাজে সাজিয়ে দিন বাবাকে।
সিরিয়ালের শঙ্খ স্যার জানালেন, এমন বড় মাপের একজন অভিনেতা হওয়া সত্ত্বেও এতটুকু অহংকার ছিল না অভিষেকের মধ্যে। শুটিং সেট নাকি একাই মাতিয়ে রাখতেন তিনি। সকলকে নিয়ে একসঙ্গে বসে খেতেন। শট নিয়ে আলোচনা হত। তেমনি নিজের অপূর্ণ আকাঙ্খা গুলোর কথাও ভাগ করে নিতেন ছেলের সঙ্গে।
https://www.instagram.com/p/CbezygoBt2D/?utm_medium=copy_link
প্রতীকের কাছে তিনি আক্ষেপ করেছিলেন, বড়পর্দায় আরো অনেক চরিত্রে অভিনয় বাকি ছিল। সুযোগই পেলেন না। সেই আক্ষেপ থেকেই ছোটপর্দায় নিজের সবটা দিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। মোহর, খড়কুটো, টাপুর টুপুর, কুসুম দোলা, ফাগুন বৌয়ের মতো সিরিয়ালে তাঁর অভিনয় মনে রাখবেন সকলেই।
অভিষেকের ঘনিষ্ঠ জনদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছিলেন, পরের দিকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করতেন তিনি। শরীরও ভেঙে যাচ্ছিল। প্রতীক জানান, তেমন ভাবে অনিয়ম কিছু না করলেও খুব ধূমপান করতেন অভিনেতা। তাই নিয়ে ছেলের কাছে বারণও শুনতেন। অনস্ক্রিনে বাবা ছেলের সম্পর্কটা অফস্ক্রিনে বন্ধুর মতো ছিল। সেই বাবাকেই শেষযাত্রায় কাঁধ দেওয়ার কথাও জানান প্রতীক।