বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Primary Recruitment Scam) কয়েকদিন আগেই জামিন পেয়েছেন কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। বেশ কিছু শর্ত বেঁধে তাঁকে জামিন দিয়েছে আদালত। জেলমুক্তি হতে না হতেই এবার ‘কাকু’কে নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করল সিবিআই। চার্জশিটে তুলে ধরা হয়েছে সুজয়কৃষ্ণের একাধিক ‘কীর্তি’!
কালীঘাটের কাকুকে (Kalighater Kaku) নিয়ে বিস্ফোরক দাবি সিবিআইয়ের!
দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। এই দুর্নীতির শিকড় খুঁজতে মরিয়া তাঁরা। সিবিআইয়ের এবার দাবি, এই দুর্নীতি কাণ্ডের ‘প্রমাণ লোপাট’ করতে নিজের ও এক অনুচরের ইমেল আইডি মুছে ফেলেছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। যে দু’জনের কাছে তালিকা সম্বন্ধিত ইমেল পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের সূত্র ধরে ‘কাকু’র যোগসূত্র পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। চার্জশিটে সেই তথ্যও তুলে ধরেছেন তদন্তকারীরা।
সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে, প্রাথমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৫৭ জন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা দয়াল হাজরা নামের এক ব্যক্তি কালীঘাটের কাকুর (Kalighater Kaku) এক দালাল মারফৎ লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের একজন মহিলা রিসেপশনিস্টকে পাঠিয়েছিলেন। ওই মহিলা রিসেপশনিস্ট ওই লিস্ট সুজয়কৃষ্ণের ইমেলে পাঠিয়ে দেন। তিনি আবার সেই তালিকা দীপক বিশ্বাস ও অরবিন্দ রায়বর্মণকে ইমেল করে দেন।
পরবর্তীতে কালীঘাটের কাকু নিজের ও নিখিল হাতি নামে এক অনুচরের ইমেল আইডি (Email ID) মুছে ফেলেন। সেগুলি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দীপক ও অরবিন্দের ইমেল পরীক্ষা করতে গিয়ে তাঁরা সুজয়কৃষ্ণের ওই ইমেল আইডির খোঁজ পান এবং সেই তালিকা কোন উৎস থেকে এসেছিল সেটাও জানতে পারেন।
এছাড়া অমিতাভ দত্ত নামের আরও একজন দালাল সুজয়কৃষ্ণকে ৮৫ জন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর তালিকা পাথিয়েছিলেন। গোয়েন্দাদের কাছে সেই সূত্রও রয়েছে ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ওই ২৪২ জন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে ৬১ জন প্রার্থী চাকরি পেয়ে গিয়েছেন।
সিবিআই (CBI) চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে নানান দালালেরা যে টাকা এনে দিতেন, ডায়েরিতে সেই হিসেব লিখে রাখতেন কালীঘাটের কাকুর অনুচর নিখিল। ওই চক্রের দালালদের থেকে এমন বেশ কিছু ডায়েরি পাওয়া গেলেও সুজয়কৃষ্ণের ডায়েরি পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, তারা এই মামলার তদন্তভার নেওয়ার পর ‘কাকু’ ওই ডায়েরি নষ্ট করে দেন।
এখানেই শেষ নয়! শেখ আব্দুল সালাম নামের এক দালালের ফোনে টাকার লেনদেন সম্বন্ধিত কথোপকথন ছিল। গোয়েন্দারা চার্জশিটে দাবি করেছেন, এই মামলার তদন্ত শুরু হতেই ওই দালালকে হুমকি দিতে শুরু করেন কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) এবং প্রমাণ লোপাট করতে ওই ফোনটিও নষ্ট করে দেন।
সিবিআই সূত্রের দাবি, ইমেল আইডি মুছে দেওয়া থেকেই পরিষ্কার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Kalighater Kaku) এই দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তদন্ত শুরু হওয়ার পর তিনি প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন। সেই কারণে চার্জশিটে প্রমাণ লোপাট ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।