বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতির জেরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন ২৫,৭৫২ জন। SSC ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বর্তমানে এই ইস্যুতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি রাজ্যে। হকের চাকরি ফেরানোর দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ‘যোগ্যরা’। এরই মধ্যে এবার ভয় ধরাচ্ছে প্রাথমিক দুর্নীতি (TET Scam)।
টেট মামলা উঠবে হাইকোর্টের নয়া বেঞ্চে | TET Scam
SSC নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সুপ্রিম রায়ের পর থেকে আশঙ্কায় ভুগছেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা (Primary Teachers)। আইনজীবীদেরও একাংশের আশঙ্কা এবার কোপ পড়তে পারে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরির উপর! কিন্তু কেন?
২০১৬ সালে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই সংখ্যক চাকরি খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। ২০২৩ সালে ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যা। ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় ডিভিশন বেঞ্চে। ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিল রাজ্য।
হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের নির্দেশ বদল করে। আদালত জানায় আপাতত ওই শিক্ষকরা কাজ করতে পারবেন ঠিকই কিন্তু পরে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে ওই ৩২০০০ শিক্ষককে। সেখানে ব্যর্থ হলে তাদের চাকরি যাবে।
এদিকে এই মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সর্বোচ্চ আদালতে হাইকোর্টের সব নির্দেশই সেই সময় খারিজ করে দেয়। তবে মামলা ফেরে হাইকোর্টেই। হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা ওঠে অতীতে। এরই মধ্যে সম্প্রতি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিচারপতি সৌমেন সেন। এবার শুনবেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী।
কী নিয়ে ভয়? প্রাথমিকের মামলায় কোনও প্যানেল প্রকাশ পায়নি। তবে SSC মামলায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে যেমন কোনো উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট নেই তেমনই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছেও নেই কোনও ওএমআর শিট নেই। এসএসসির মতো প্রাথমিকের ক্ষেত্রেও পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। তাই সে ক্ষেত্রেও গোটা প্যানেল বাতিলের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে আইনজীবী মহলের একাংশের মত।
আরও পড়ুন: আদালতের নজরদারিতে অশান্তির ঘটনার তদন্ত হোক! মুর্শিদাবাদ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা
প্রাথমিকের ২০১৬ ও ২০২০-র নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালের ভিত্তিতে ৪২,৯৪৯ জন ও ২০ সালের ভিত্তিতে ১৬,৫০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। যদি এক্ষেত্রেও দুর্নীতির জেরে গোটা প্যানেল বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় আদালত, তাহলে এই দুই প্যানেলই বাতিলের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এবার হাইকোর্টের নতুন বেঞ্চে এই মামলা কোন মোড় নেয় সেটাই দেখার।