বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিগত কয়েক মাস ধরেই ইরানে (Iran) হিজাব বিরোধী আন্দোলন চলছে তীব্র ভাবে। সেদেশের তরুণ সমাজ এই পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সরকারি দমন নীতির জেরে বহু আন্দোলনকারী প্রাণ হারিয়েছেন বিক্ষোভে অংশ নিয়ে। বহু দেশেও ইরানের বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন মানুষ। এবার ইরানের প্রতিবাদীদের সমর্থনে রাস্তায় নামলেন ভারতীয়রাও। ইরানের আন্দোলনকে সমর্থন জানাতে কেরলের (Kerala) কোঝিকোড়ে হিজাব পোড়ালেন একদল মহিলা।
হিজাব পোড়ানোর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এম ফৌসিয়া। তিনি বলেন, ‘আমরা রবিবার দিনব্যাপী সেমিনার করে মাহসা আমিনিকে শ্রদ্ধা জানাই। এরপর প্রতীকীভাবে হিজাব জ্বালিয়ে এই প্রথার প্রতিবাদ জানিয়েছি।’ প্রায় দুই মাস আগে, মাহসা আমিনি নামক এক তরুণী ‘ঠিক ভাবে’ হিজাব না পরার কারণে তেহরানে পুলিস তুলে নিয়ে যায়। তারপর থানায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। পুলিস থানাতেই মারা যান তিনি। এরপর থেকেই সেদেশে হিজাব বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়।
ফৌসিয়া বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর নারী বিভাগ মাঝে মধ্যেই এ ধরনের সেমিনার ও বিতর্কের আয়োজন করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই সেমিনারে প্রায় ৫০ জনের বেশি নারী অংশ নেন এবং বিষয়টি নিয়ে গুরুতর আলোচনা হয়। আজকের আধুনিক যুগে এ ধরনের প্রথার কোনও স্থান নেই। কোনও নারীকে হিজাব পরতে কেউ বাধ্য করতে পারে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন সনাতনপন্থী ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তিরা সমাজে প্রতিনিয়ত আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। ফৌসিয়া জানান, ‘আমাদের গ্রুপ আগামী মাসে মালাপ্পুরমে আবার একই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চলেছে।’ সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, কেরালায় এই জাতীয় প্রতিবাদ এই প্রথম।
আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই ইরানে শুরু হয়েছে প্রবল হিজাব বিরোধী আন্দোলন। হিজাব পরার বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। মহিলারা প্রকাশ্যে হিজাব পুড়িয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান তুলছেন মাঝ রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছেন। বহু বিক্ষোভকারী পুলিসের গুলিতে মৃত্যু বরণ করেছেন। তবে থামেনি প্রতিবাদ। প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হিজাব পুড়িয়েছেন মেয়েরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করে নিজেদের চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে নারী। এবার সেই প্রতিবাদের উত্তাপ আরব সাগর টপকে ছড়িয়ে পড়লো ভারতের বুকেও।