১৯৭৭ থেকে ২০২৪, কম আন্দোলন দেখেনি বাংলা, স্লোগানে এসেছে কী বদল?

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিদেশি শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন (Protest) হয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তী খাদ্য আন্দোলন, নকশাল আন্দোলন (Protest) থেকে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন কিংবা হালের আরজিকর কাণ্ডের বিরুদ্ধে বিচারের আন্দোলন (Protest), কম জনরোষ দেখেনি এই দেশ, এই রাজ্য। তেমনি রক্ত গরম করেছে কিছু আগুন ঝরানো স্লোগান।

সময়ের সঙ্গে আন্দোলনের (Protest) স্লোগানের বিবর্তন

১৯৭৭ এ দেশের রাজনীতির অঙ্ক বদলে দেওয়ার আন্দোলন (Protest) থেকে সাম্প্রতিক আরজিকরে মহিলা চিকিৎসকের নৃশংস খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার বিরুদ্ধে মানুষের গর্জন যে দেশব্যাপী আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে, সেখানে বারে বারে উঠেছে কিছু স্লোগান, যা আন্দোলনের (Protest) গতিকে তীব্রতর করেছে, দিয়েছে নতুন মাত্রা। এমনি কিছু উল্লেখযোগ্য স্লোগান এবং তার বিবর্তন ফিরে দেখা হল এই প্রতিবেদনে।

আরো পড়ুন : মেয়ে নেই, মূর্তিই থাক! মহালয়ায় স্থাপন হচ্ছে RG Kar নির্যাতিতার আবক্ষ ভাস্কর্য

১৯৭৭ এর আন্দোলন (Protest)– প্রথমেই পিছিয়ে আসুন কয়েক দশক। ১৯৭৭ সাল। তার বছর দুই আগে ২৫ শে জুন দেশ জুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। চলছে চূড়ান্ত নৈরাজ্য পরিস্থিতি। সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত অভিযোগও উঠেছিল শাসকের বিরুদ্ধে। আজও সেসব দিন মনে করলে শিউড়ে ওঠেন বহু প্রবীণ ব্যক্তি।

আরো পড়ুন : পরনে কালো মনোকিনি, পুলের স্বচ্ছ জলে ভাসছেন সন্দীপ্তা, অনুরাগীদের প্রাকপুজোর উপহার নায়িকার

১৯৭৭ সালের জরুরি অবস্থার পর হয় সাধারণ নির্বাচন। সে সময় ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে হয়েছিল আন্দোলন (Protest)। ‘ইন্দিরা হটাও দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে মুখর হয়েছিল দেশ। এই স্লোগানে ভর করেই শাসককে গদি ছাড়া করেছিল ‘লোকনায়ক’ জয়প্রকাশ নারায়ণ, মোরারজি দেশাইদের বিরোধী শক্তি।

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলন (Protest)– পশ্চিম বাংলায় বর্তমান শাসক দলের আগমনের রাস্তা সুপ্রশস্ত করেছিল এই আন্দোলন (Protest)। তখন রাজ্যে চলছে বাম শাসন। সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর গাড়ির কারখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর নন্দীগ্রামে পেট্রোরসায়ন হাব তৈরি হবে ঘোষণা হয়। তিন ফসলী জমি অধিগ্রহণ করার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় কৃষকরা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তখন পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীদের মুখ।

‘মা, মাটি, মানুষ’ যে শব্দবন্ধগুলি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে প্রায়শই শোনা যায় তাদের জন্ম সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের (Protest) সময়ই। এই আন্দোলনই অবসান ঘটায় দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের। পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার।

Protest

আরজিকর আন্দোলন (Protest)– কাট টু ২০২৪, বর্তমান সময়। গত ৯ ই অগাস্ট আরজিকর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার পাশবিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় গোটা দেশ। তীব্র থেকে তীব্রতর হয় প্রতিবাদ আন্দোলনের (Protest) স্বর। সেই সঙ্গে জায়গা করে নেয় কিছু স্লোগান এবং গান। জুনিয়র ডাক্তার থেকে সাধারণ মানুষের জমায়েত, প্রতিবাদ মিছিলে কখনো শোনা গিয়েছে ‘আজাদি’, কখনো ‘জাস্টিস ফর আরজিকর’। ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করেই বাঁচতে চাই’ থেকে ‘পুলিশ তুমি দুষ্টু লোক, তোমার মাথায় উকুন হোক’ এর মতো ক্রিয়েটিভ স্লোগানও জায়গা করেছে আন্দোলনে। সময়, স্থান নির্বিশেষে বদলেছে আন্দোলনের ধরণ, বিষয়বস্তু। কিন্তু এক থেকে গিয়েছে জনরোষ, যা এখনো যে সমাজের মাথাদের বুকে কাঁপুনি ধরানোর ক্ষমতা রাখে তা প্রমাণিত বহুবার।


Niranjana Nag
Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর