বাংলাহান্ট ডেস্ক : বন্ধুত্বের নামে চলছে বিশ্বাসঘাতকতা। নেপালে এমনই অভিযোগ উঠে এল চিনের বিরুদ্ধে। চিনের সাম্রাজ্যবাদী নীতি নিয়ে এনার সরব হলো জাতীয় ঐক্য অভিযান নামের একটি নেপালের একটি সংগঠন। সীমান্ত নিয়ে চিনের (China) সঙ্গে নেপালের (Nepal) বিবাদ অনেক আগে থেকেই। নেপালের অভিযোগ, হুমলা জেলায় জমি দখল করেছে বসে আছে চিন। ওই এলাকায় নিজেদের সীমানাও বাড়িয়ে নিয়েছে বেজিং (Bejing)। বেশ কয়েকমিটার ভিতরে পোঁতা হয়েছে চিনের পতাকাও।
বছর খানেক আগে চিনা জবরদখল নিয়ে একটি রিপোর্ট এসে পৌঁছয় নেপাল সরকারের হাতে। সেপ্টেম্বর, ২০২১-এর ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, নেপালের পশ্চিমে হুমলা জেলায় অবৈধ ভাবে জমি দখল করে রেখেছে চিন। শুধু তাই নয়, সীমান্তে নেপালের পুলিশের কর্মীদেরও হুমকি দিচ্ছে চিনা সীমান্তরক্ষীরা।
পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে যখন নেপালের জমিতে লালুংজং এলাকায় নেপালিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় চিনা জওয়ানরা। এরইসঙ্গে, নেপালি পশুপালকদের নেপালেরই জমিতে গরু-মোষ সহ গবাদি পশু চড়াতে বাধা দিচ্ছে চিনের সেনা। প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়ে সেই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, নেপালের জমিতে বর্ডার পিলারের চারপাশে বেড়া দিয়ে একটি খাল ও সড়কও নির্মান করছে চিনের সেনা।
এর পরই নেপালে চিনের জমিকে ফিরিয়ে আনার ব্যপারে সরকারকে চাপ দিতে শুরু করেছে আরইএফ। এই সংগঠনের অধ্যক্ষ বিনয় যাদবের নেতৃত্বে একটি প্রতীনিধি দল নেপালের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী শ্রেষ্ঠের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের দাবী জানান। জানা যাচ্ছে চিনের সঙ্গে সীমা বিবাদের সমাধান করতে নেপাল সরকার সব রকম চেষ্টা করছে। তারপরও চিনা আগ্রাসনের সামনে একান্তই অসহায় দশা নেপালের।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরেও নেপালে অন্যায় ভাবে অনুপ্রবেশ ঘটায় চিন। সীমান্তবর্তী হুমলা জেলায় ১১টি বাড়িও তৈরি করে ফেলে তারা। এরপর নেপালে চিনা দূতাবাসের সামনে বেজিংয়ের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কিন্ত তাতে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। গোরখা, ডোলাখা, হুমলা, দারচুলা, সিন্ধুপালচক, রাসুয়া এবং সাঙ্খুওয়াসাভার মতো জায়গাগুলিতেও নিজের সীমান্ত ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে নিয়েছে চিন। প্রতিবাদের বদলে চিনের সুরেই সুর মিলিয়েছিলেন নেপালের সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। যার প্রভাব পড়ছে ২০২২ সালে এসে। বারবার চিনা আগ্রাসনের শিকার হতে হচ্ছে নেপালকে। আর এর বিরুদ্ধেই চিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পরিস্থিতি গোটা নেপাল জুড়েই।