বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মাঝে আর মাত্র দু’টো দিন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam)। তার আগে অ্যাডমিট বিভ্রাট সহ বেশ কিছু ইস্যু দেখা দিয়েছে। এই আবহে এবার বড় হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (School Teachers) একাংশ। মাধ্যমিক শুরুর দু’দিন আগে পরীক্ষা বয়কটের হুঁশিয়ারি দেওয়া হল। ইতিমধ্যেই তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
মাধ্যমিক (Madhyamik Exam) বয়কটের হুঁশিয়ারি কেন দেওয়া হল?
নিয়োগ দুর্নীতির জেরে গত বছর ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে রাতারাতি চাকরি হারান প্রায় ২৬,০০০ মানুষ। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে তাঁদের ভাগ্য। আগামী সপ্তাহে শীর্ষ আদালতে সেই মামলার শুনানি রয়েছে। হাতে বেশি সময় নেই। তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে কিছু নথি তুলে দিতে চান ২০১৬ সালে চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই কারণে গতকাল কালীঘাট অভিযানের ডাক দেওয়া হলেও পুলিশি বাধার কারণে তা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার এর প্রতিবাদে ধিক্কার দিবস পালন করছেন তাঁরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, সরকারের কোনও প্রতিনিধি অথবা মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা না করলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhyamik Exam) অংশগ্রহণ করবেন না। একজন আন্দোলনকারী বলেন, ‘গতকাল আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের বাধা দেওয়া হয়। আমাদের কাছে যে তথ্য ছিল, সেটাই আমরা তুলে দিতে চেয়েছিলাম। অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দেওয়া হয়। ঘাড় ধাক্কা দেওয়া হয়। আমরা বিদ্যালয়, ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসি। অন্য কোনও পেশায় যাওয়ার কথা ভাবিনি’।
আরও পড়ুনঃ রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA নিয়ে টানাপড়েন! কত টাকা মহার্ঘ ভাতা পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
এরপরেই মাধ্যমিকে (Madhyamik) অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, ‘এটা হয়তো শিক্ষকসুলভ নয়। তবে মাধ্যমিক বয়কট ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই’। আন্দোলনকারীরা বলেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেল করছেন। আসন্ন মাধ্যমিকে গার্ড দেবেন না, খাতা দেখবেন না, একথা জানাবেন।
প্রতিবাদী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথায়, ‘২০১৬ সালের এসএলএসটি প্যানেলে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৫,৪০২। আমরা ভোটের কাজের সঙ্গে, নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে, মাধ্যমিক পরিচালনার সঙ্গে জড়িত। আজ আমরা যে অবস্থার মধ্যে রয়েছি, সেই পরিস্থিতি আসতো না। রাজ্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবীরা কেন আদালতের সামনে সত্যি কথা তুলে ধরছেন না? কেন আমাদের বাঁচাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন না? একটা দফতরের তথ্যের সঙ্গে কেন অন্য দফতরের তথ্যের গরমিল থাকবে? এটা তো আমাদের বিপদে ফেলতে পারে’।
আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, তাঁদের কাছে এমন তথ্য রয়েছে, যেটা হয়তো আইনজীবীদের কাছেও নেই। সেই তথ্য তুলে ধরা হলেই হয়তো প্যানেল বেঁচে যেতে পারে। এই আবহে এবার সরাসরি মাধ্যমিক (Madhyamik Exam) বয়কটের ডাক দিলেন তাঁরা। এমতাবস্থায় এত সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা শেষ অবধি সত্যিই মাধ্যমিক বয়কট করলে পরীক্ষা পরিচালনা করতে কোনও সমস্যা হবে না? সেক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কী ব্যবস্থা নেবে? এখন সেদিকেই নজর।