বাংলা হান্ট ডেস্ক: ডাক্তারদের উপর অনৈতিক নির্যাতন যেন বেড়েই চলেছে দিনে দিনে, প্রতিনিয়তই ডাক্তার নিগ্রহের কোন না কোন খবর আমরা পাই। কিছুদিন আগেই এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছিলো গোটা দেশে এমনকি গোটা বিশ্বেও। কিন্তু এবারের ঘটনা যেন আরো ভয়ানক, আরো ঘৃণ্য। অসমে এক বর্ষীয়ান চিকিৎসককে পিটিয়ে মেরে ফেলল উন্মত্ত জনতা। অসমের জোরহাটে ঘটেছে এই ঘটনাটি। এর প্রতিবাদ জানাতে সোমবার অসমে বন্ধের ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। রাজ্যের জুনিয়র ডাক্তাররাও নেমেছেন আন্দোলেন।
ঘটনাচক্রে শনিবার জোরহাটে একটি চা বাগানে ৭৩ বছর বয়সী চিকিৎসক দেবেন দত্তকে পিটিয়ে মারে জনতা। এদিন টেওক চা বাগান সংলগ্ন একটি হাসপাতালে এক শ্রমিক এর মৃত্যু ধীরে শুরু হয় বচসা। সেই মুহূর্তে দেবেন বাবু উপস্থিত না থাকায়, চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বিশাল এক জনতার মধ্যে। এরপর সেখানে দেবেন বাবু উপস্থিত হলে শুরু হয় তর্ক বিতর্ক এবং হাতাহাতি। এরপর এই হাতাহাতি এমনই তুঙ্গে পৌঁছয় যে ক্ষুব্ধ জনতা ৭৩ বছরের বৃদ্ধ চিকিৎসককে মারতে মারতে মেরেই ফেলে।
সংবাদমাধ্যম কে জোরহাটের ডেপুটি পুলিস কমিশনার রোশনি কোরাতি জানান, ‘ এই গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে সোমরা মাজি নামে এক চা বাগান শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে। ওই শ্রমিক কে শনিবার দুপুর বেলা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। সেই সময় ডাক্তার দত্ত হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি হাসাপাতালের ফার্মাসিস্টও ছিলেন না সেখানে। এক নার্স ওই শ্রমিক কে সেলাইন দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তারপর ওই চিকিৎসক ঘটনাস্থলে পৌঁছতে তার ওপর হামলা করে শ্রমিকরা।
জানা গেছে এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ হাসপাতাল উপস্থিত হন ডা দেবেন দত্ত। তাকে দেখতে পেয়ে বেধড়ক মারধর করে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা, শুধু তাই নয় এরপর তাকে তালা বন্ধ করে দেওয়া হয় একটি ঘরে। এরপর পুলিশ এসে চিকিৎসককে উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘৃণ্য ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে। পশ্চিমবঙ্গ চিকিত্সক ফোরাম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডাক্তার দেবেন দত্ত এলাকার মানুষের সেবার খাতিরে তাঁর সারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এমনকি অবসর নেওয়ার পরও তিনি তার কাজ কে ভালবেসে দিনের পর দিন তার ডাক্তারী চালিয়ে গেছেন। তার মূল্য দিল এলাকার মানুষ।