৫ লক্ষ টাকা না দিলে “কচুকাটা” করা হবে! উড়ো চিঠি দিয়ে একাধিক পুজো কমিটিকে হুমকি বাংলাদেশে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টি বারংবার উঠে আসছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সংখ্যালঘুদের ওপরে আক্রমণের বিষয়টি মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থান থেকে শুরু করে তাঁদের বাড়ি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও উঠছে। এর পাশাপাশি চলছে মহিলাদের ওপরেও নির্যাতন। এমনকি ঘটেছে খুনের ঘটনাও। যার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা।

বাংলাদেশে (Bangladesh) হুমকির সম্মুখীন একাধিক দুর্গাপুজো কমিটি:

তবে, এবার বাংলাদেশে (Bangladesh) দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই খুলনায় এক পুজো কমিটির কাছে এসে পৌঁছেছে এক উড়ো চিঠি। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, দুর্গাপুজো করতে গেলে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। গত ৭ সেপ্টেম্বরের তারিখ উল্লেখ থাকা ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, দুর্গাপুজো করতে হলে প্রতিটি মন্দির কর্তৃপক্ষকেই “চাঁদা” হিসেবে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা। অন্যথায় কেটে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ওই চিঠিতে আরও জানানো হয় যে, ওই টাকা এক সপ্তাহের মধ্যেই দিতে হবে। কালিনগর বাজারে টাকা দেওয়ার স্থান পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে, এই বিষয়টি প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের জানানো হলে “কচুকাটা” করা হবে বলেও চিঠিতে লেখা রয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, “তোদের পরিবারও রেহাই পাবে না। প্রশাসন, সেনাবাহিনী সব আমাদের কেনা। চালাকি করে কোনও লাভ হবে না। টাকা কিন্তু দিতেই হবে। আল্লাহর কসম টাকা না পেলে কেটে টুকরো টুকরো করব। তোরা আমাদের নজরে আছিস।”

আরও পড়ুন: ইজরায়েলের হামলার পর লেবাননের পাশে দাঁড়াল চিন! সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে কি জানাল বেজিং?

জানিয়ে রাখি যে, এবারের নিরাপত্তার দিকটি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকারের তরফ ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূলত, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে প্রাক-দুর্গাপুজো, দুর্গাপুজো চলাকালীন এবং প্রতিমা বিসর্জন সহ দুর্গাপুজো-পরবর্তী এই তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের (Bangladesh) আইজি ময়মুল ইসলাম। এদিকে, দেশের নেতারা বারংবার সম্প্রীতির কথা জানালেও হুমকি কিন্তু থামছে না। এই হুমকি চিঠি খুলনার দাকোপের বিভিন্ন পুজো কমিটিকে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করা হয়েছে থানায়।

আরও পড়ুন: ক্রমশ বাড়ছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আক্রমণ! প্রতিবাদে ভারতে উঠল বাংলাদেশ বয়কটের ডাক

তবে, সামগ্রিক অবস্থার জেরে ভীত হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের (Bangladesh) একাধিক পুজো কমিটির সদস্যরা। এই প্রসঙ্গে দাকোপের কামারখোলা দুর্গাপুজো কমিটির সভাপতি শেখর হালদার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, এই বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে পুজো না করে ঘরোয়াভাবে পুজো করার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও এই উড়ো চিঠি পাওয়ার পর পুজো কমিটিগুলির তরফে আর পুজোর আগ্রহ দেখানো হচ্ছে না। এমনকি, এই বছর তাঁরা তাঁদের পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শেখর।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর