বাংলাহান্ট ডেস্ক : এ যেন ‘ছিল রুমাল হল বেড়াল।’ আয়োজন করা হয়েছিল দুর্গাপুজোর হেরিটেজ তকমা মেলায় ইউনেস্কোকে (UNESCO) ধন্যবাদ জানিয়ে মিছিল। চলছিলও বেশ। কিন্তু জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির সামনে সেই মিছিলেই যে এমন ডার্বির (Derby) শুরু হয়ে যাবে তা ঘুণাক্ষরেও বোঝেন নি কেউ। বৃহস্পতিবার দুপুরে গোটা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ যেন এক লহমায় বদলে গেল গত রবিবারের ইএম বাইপাস-এ।
ঘটি-বাঙাল, চিংড়ি-ইলিশের যুদ্ধের মতোই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান (Eastbengal-Mohunbagan) সমর্থকরা যেখানেই যান সেখানেই তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। এই পুজোর মিছিলেও (Puja rally) তাঁর ব্যতিক্রম হল না। মিছিলে অংশগ্রহণ করার জন্য কলকাতার ক্লাবগুলোকে এদিন আমন্ত্রণ জানায় রাজ্য সরকার।সেই মিছিলে লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন পতাকা নিয়ে গিয়েছে দুই ক্লাবের সমর্থকরাই। কিন্তু পাশাপাশি দাঁড়াতেই শুরু হয়ে যায় তীব্র উত্তেজনা। চলে স্লোগান, পাল্টাস্লোগানের ঢেউ।
গত রবিবারই ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে ১-০ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারায় মোহনবাগান। এদিন তাই উত্তেজনা ছিল চরমে। মোহনবাগানের দিক থেকে আওয়াজ উঠল, ‘যতবার ডার্বি-ততবার হারবি।’ ব্যাস আর যায় কোথায়! পাল্টা ইস্টবেঙ্গলও খোঁচা দিয়ে স্লোগান তুলল—’গঙ্গাপাড়ের ঘটিকে-কিনে নিল এটিকে!’ এর পর স্লোগান উঠল ‘রক্তের রঙ সবুজ মেরুন।’ ওদিকে ইস্ট বেঙ্গল বলল, ‘মশাল জ্বালবে লাল হলুদ।’ বাদ-বিতর্ক চললেও সীমা অতিক্রম করেনি কোনও পক্ষই। লাল হলুদ বনাম সবুজ মেরুন লড়াই বাক্-যুদ্ধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
প্রসঙ্গত ডুরান্ডের ম্যাচে গত রবিবারই মরসুমের প্রথম ডার্বি দেখেছে কলকাতা। প্রায় তিন বছর পর ফুটবলের মক্কায় বড় ম্যাচ হওয়ায় গ্যালারি কার্যত উপচে পড়েছিল। সেই ম্যাচে আত্মঘাতী গোলে হেরে যায় ইস্টবেঙ্গল। গতকালও ডুরান্ডের ম্যাচে জয় পেয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু বাকযুদ্ধের লড়াইয়ে একে অপরকে বলেই দিল ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী।’ কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি দিল না। পুজোর মিছিল দেখল ফুটবলের উত্তাপ!
আজকের এই শোভাযাত্রায় অংশ নেয় শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ অন্তত ১৩৫টি পুজো কমিটি। বেলা দুটোয় শুরু হয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় অংশ নেয় ইউনেস্কোর প্রতিনিধিও। বৃহস্পতিবার বেলা দুপুর ২টোয় জোড়াসাঁকো থেকে শুরু হয় এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। জোড়াসাঁকো থেকে এই শোভাযাত্রা শুরু হয়ে গিরিশ পার্ক, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ডোরিনা ক্রসিং, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে শেষ হবে রেড রোডে।
]দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। এখন শোভাযাত্রার জন্য কলকাতার বেশ কিছু রাস্তার যানবাহনও নিয়ন্ত্রণ করা হবে এদিন। দুপুর ১টা থেকে ৪টে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, রেড রোড, ডোরিনা ক্রসিং ও রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ। সেজন্য উত্তরমুখী যানকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট ও রবীন্দ্র সরণি দিয়ে। দক্ষিণমুখী যান আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস রোড, হাওড়ামুখী যান স্ট্র্যান্ড রোড এবং শিয়ালদাগামী যান এজেসি বোস রোড ও এপিসি রায় রোড দিয়ে ঘুরে যাবে বলে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের জানানো হয়েছে।