বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দিনটা ছিল ভালোবাসার দিন, ২০১৯ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারী। গোটা ভারতে (India) যখন এই ভালোবাসার দিন পালিত হচ্ছিল, তখন দেশজুড়ে ঘনিয়ে এল দুঃসংবাদ। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা (Pulwama attack) জেলার লেথোপোড়ায় নিরাপত্তা কর্মী বহনকারী একটি বাসের সঙ্গে অতর্কিতেই ধাক্কা দেওয়া হয় একটি জঙ্গি সহযোগে বিস্ফোরক বহনকারী গাড়ির।
ভয়াবহ জঙ্গী হামলায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সিআরপিএফের ৪০ জওয়ান এবং আহত হন অনেকেই। ভারতের ইতিহাসে একটি কালো দিন হিসাবে সকলের হৃদয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে যায় এই হামলা।
পুলওয়ামা হামলার তথ্য প্রকাশ
প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তান সর্বদাই ভারতের উপর হামলা চালাতে উদ্যত থাকে। বিভিন্ন সময়ে নানাবিধ জঙ্গী হামলার মাধ্যমে ভারতের বীর সেনাদের উপর অতর্কিতেই হামলা চালিয়েছে। এই পুলওয়ামা হামলার পরবর্তীতে তদন্তের নিরিখে প্রায় দীর্ঘ দেড় বছর পর ভারতীয় সেনার হাতে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, প্রায় ২ বছর ধরে পাক জঙ্গী সংগঠন জঈশ ই মহম্মদ এই হামলার ছক কষেছিল।
সন্ত্রাসবাদীরা চোরাপথে প্রবেশ করে ভারতে
আফগানিস্তানে আল কায়দার ট্রেনিং ক্যাম্পে গাড়িতে বিস্ফোরক বেঁধে ভারতকে বড়সড় ধাক্কা দেবার জন্য এই হামলার ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল জঙ্গিদের। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে আফগানিস্তানে ট্রেনিং সম্পন্ন করে ২০১৮ সালে চোরাপথে ভারতে প্রবেশ করেছিল এই পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী ওমর ফারুক।
পরিবর্তীত হয় হামলার দিন
১৪ ই ফেব্রুয়ারী নয়, এই হামলার জন্য প্রথমে দিন নির্ধারন করা হয়েছিল ৬ ই ফেব্রুয়ারী। কারণ ৬ ই ফেব্রুয়ারী প্রথমে এই সিআরপিএফের কনভয় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন প্রবল বরফপাত হওয়ায় সিআরপিএফ কনভয়ের যাওয়া বাতিল হয়ে যায়। সেইদিন সকালেই সকলের অগোচরেই ২০০ কেজি বিস্ফোরক বেঁধে গাড়ি তৈরি করেছিল ওমর ফারুক। কিন্তু অবশেষে ওইদিন হামলার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখা হয়।
আশ্রয় নিয়েছিল অপর এক জঙ্গির বাড়িতে
এই কাজে ওমর ফারুককে সাহায্য করেছিল শাকির বশির, ইন্সা জান, পির তারিক আর বিলাল আহমেদ। শাকিবের বাড়িতেই আরডিএক্স, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, জিলটিন স্টিক, আইইডি সহ দিনের পর দিন আশ্রয় নিয়েছিল ওমর ফারুকসহ বাকি সন্ত্রাসবাদীরা। এই হামলার ছক পরিকল্পনা করেছিল।
৬ ই ফেব্রুয়ারী মিস হয়ে গেলেও ১৪ ই ফেব্রুয়ারী আর কোনভাবেই রক্ষা পেল না সিআরপিএফ কনভয়। ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই করে হাইওয়ে থেকে ৫০০ মিটার দূরে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটায় আদিল দার।
গোটা ঘটনাটি তদন্ত করতে গিয়ে এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, আধিকারিকরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, ছবি, ভিডিও থেকে পেয়েছেন। সেই সমস্ত তথ্য চার্জশিটের আদালতে পেশ করা হবে।