তলানিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা! কসবায় চাকরিহারাদের মার! জঙ্গিপুরে প্রাণ বাঁচাতে দোকানে ‘লুকোলেন’ পুলিশকর্মী

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কোথায় রাজ্যের (West Bengal) আইনশৃঙ্খলা? মঙ্গলবার ওয়াকফ আইন (WAQF Act) প্রত্যাহারের দাবিতে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় জঙ্গিপুর। প্রাণ বাঁচাতে দোকানে ‘আশ্রয়’ নেন পুলিশকর্মী। তার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার কসবায় চাকরিহারাদের বেধড়ক মার পুলিশের (Police)! এই দু’টি ঘটনায় বড়সড় প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়াল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

অশান্ত জঙ্গিপুরে প্রাণ বাঁচাতে দোকানে ‘আশ্রয়’ নিলেন পুলিশকর্মী (West Bengal)!

ওয়াকফ বিল নিয়ে বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের নানান প্রান্তে প্রতিবাদ হচ্ছে। বাংলাও ব্যতিক্রম নয়। বিতর্কিত এই বিল প্রত্যাহারের দাবিতে খণ্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে। গতকাল দুপুরে ১২ নং জাতীয় সড়কে ওয়াকফ বিরোধী অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। সেই অবরোধ তুলতে গেলে প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা।

নিমেষের মধ্যে তেতে ওঠে পরিস্থিতি। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। পাল্টা একাধিক গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। বিক্ষোভে আহত হন দু’জন পুলিশ। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে দোকানে ‘আশ্রয়’ নেন পুলিশকর্মী (সিসিটিভি ফুটেজে এমনটাই দেখা গিয়েছে)।

আরও পড়ুনঃ পয়লা বৈশাখের আগেই মিলবে আরও একটি ছুটি! দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

শেষমেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জঙ্গিপুর (Jangipur) পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায়ের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী। বর্তমানে সেখানে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। এই আবহে বুধবার তেতে ওঠে কসবা। সেখানে চাকরিহারাদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।

Jangipur violence West Bengal

সম্প্রতি ২০১৬ সালের এসএসসির (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে একধাক্কায় চাকরি খুইয়েছেন ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। তার প্রেক্ষিতে বুধবার রাজ্যজুড়ে চাকরিহারা শিক্ষকরা ডিআই অফিস অভিযানের ডাক দেন। সেই কর্মসূচি ঘিরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কসবা।

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন চাকরিহারারা। জানা যাচ্ছে, পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড টপকে ডিআই অফিসের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করতেই তেতে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের (School Teacher) ওপর লাঠিচার্জ করেন পুলিশকর্মীরা। বেছে বেছে মহিলা প্রতিবাদকারীদের গায়ে পুরুষ পুলিশ কর্মীরা হাত তুলেছেন বলে অভিযোগ।

আরও পড়ুনঃ বাধ্যতামূলক হল OTP! বাংলার শিক্ষা পোর্টাল নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য সরকার

এদিন চাকরিহারাদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বহু শিক্ষক। এক চাকরিহারা শিক্ষিকা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। সেই সঙ্গেই জানা যাচ্ছে, একাধিক শিক্ষককে পুলিশ আটক করে নিয়ে গিয়েছে।

দু’দিন, দু’টি ভিন্ন ইস্যু। তবে দুই ক্ষেত্রেই প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। গতকাল অশান্ত জঙ্গিপুরে দেখা যায়, প্রাণ বাঁচাতে দোকানে ‘আশ্রয়’ নিয়েছেন পুলিশকর্মী। আর আজ তাঁদের বিরুদ্ধেই চাকরিহারাদের ওপর দেদার লাঠিচার্জের অভিযোগ। সমাজের ‘রক্ষকে’র ভূমিকা নিয়েই যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের (West Bengal) আইনশৃঙ্খলা? ভাবাচ্ছে এই প্রশ্ন।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X