বাংলাহান্ট ডেস্ক : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (R G kar Medical College and Hospital) ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছেন এই যুবকেরা। এরপর পুলিশের তরফে ‘সন্ধান চাই’ বলে সোশাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করা হলেই, তাদের ব্যাপারে উঠে আসে চমকে দেওয়া নানা তথ্য। খোঁজ খবর নিলেই জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই এক একজন গুণধর। ‘শাসক দলের কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ’ বা ‘পার্টির ছেলে’ হিসেবেই তাদের পরিচিতি বেশি।
আর জি কর (R G kar Medical College and Hospital) হামলায় জড়িত কারা ?
ইতিমধ্যেই অবশ্য লালবাজারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, আর জি কর হাসপাতালে (R G kar Medical College and Hospital) হামলার ঘটনায় ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম এবং ঠিকানাও প্রকাশ করেছে পুলিশ। এরপর পুলিশের প্রকাশ করা ফুটেজের ভিত্তিতেই সামনে আসে বেলগাছিয়া মেট্রো সংলগ্ন বস্তির বাসিন্দা মহম্মদ জব্বরের ছবি। সূত্র মারফত জানা যায়, জব্বরের দাদা পার্টির নেতা।
আরোও পড়ুন : মালিকের সঙ্গে মুভিডেটে ২০০টি চারপেয়ে, মাথায় হাত হল কর্তৃপক্ষের
এক প্রতিবেশীর কথায়, আরজি করে তাণ্ডবের পরের দিন সকালে তাকে দেখা গেলেও বিকেলের পর থেকে ‘খোঁজ নেই’। জব্বরের মা অবশ্য বলেন, ‘‘ছেলের ব্যাপারে কিছু জানি না। পুলিশ এসেছিল। কথা বলে গিয়েছে। ধরার হলে তো ধরতেই পারত।’’ এদিকে, হামলার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই লাপাত্তা বেলগাছিয়া বস্তির ছোটা মসজিদ সংলগ্ন গলির বাসিন্দা মহম্মদ সরফরাজ।
আরোও পড়ুন : নিম্নচাপের অ্যাকশন শুরু! দু’ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের এই ৬ জেলায়
জানা যায় যে, কাশীপুরের এক কাউন্সিলরের দলবলের সঙ্গে তার রোজকার ওঠাবসা। গন্ডগোল-ঝামেলায় জড়ানোর ইতিহাসও রয়েছে তার। এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘‘এক কথায় গুণধর। ঝামেলাবাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কিন্তু কেন জানি না, পুলিশ ধরেনি।’’ অন্যদিকে, আমির নামে এক যুবককে পুলিশ চিহ্নিত করলেও এলাকায় খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বেলগাছিয়া বস্তির এই বাসিন্দার।
প্রতিবেশীরা দাবি করেছেন, পাড়ার রাজনীতির ‘দাদা’দের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগযোগ রয়েছে আমিরের। আরজি কর (R G Kar Medical College and Hospital) হামলায় জড়িত তৌসিফ নামের আর এক যুবকের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ফোনে তৌসিফ বলেন, ‘‘কাজের সূত্রে এক জায়গায় এসেছি। আমাদের দাদারা বলায় আমরা সে দিন গিয়েছিলাম। পুলিশ আমার সঙ্গে দেখা করে গিয়েছে। ধরার হলে তো ধরেই নিত।’’
এক্ষেত্রে অবশ্য ‘দাদা’দের নাম জানা যায় নি। বেলগাছিয়া দত্তবাগান এলাকার বাসিন্দা এই যুবক একটি পোশাকের বিপণিতে কাজ করেন। যদিও, ধৃতদের মধ্যে পূর্ব সিঁথির বাসিন্দা সৌমিক দাস প্রকাশ্যেই দোষ কবুল করেন। পেশায় ব্যায়ামের প্রশিক্ষক সৌমিকের মন্তব্য, ‘‘আবেগের বসে ঘটিয়ে ফেলি। ভুল হয়েছে।’’ তবে দোষীরা যে এলাকারই হোক না কেন, বারবার উঠে এসেছে ‘দাদা’তত্ত্ব।
পাড়ার লোকেরা অবশ্য কম বেশি সবারই ক্ষেত্রে একই কথা বলছেন। এমনকি, বাড়ি খুঁজতে গেলে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যালয়! ভয়ে তাদের ব্যাপারে মুখ খুলতে চান না অনেকেই। কেউ কেউ বলেন, ‘‘পুলিশ এসে দেখা করে গিয়েছে। কিন্তু ধরে নিয়ে যায়নি। ওরা দাদার লোক, ওদের ধরবে কে?’’ কোন দাদা? উত্তর মেলে না।