৭১ বছর বয়সে ১১ টি ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স! JCB, ক্রেন সবই চালাতে পারেন এই ঠাকুমা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, কোনো কিছু শেখার জন্য বয়স কোনো বাধা সৃষ্টি করেনা। পাশাপাশি, সঠিক ইচ্ছে এবং জেদ থাকলে যে কোনো কিছুই করা সম্ভব। আর এই আপ্তবাক্যকেই আরও একবার প্রমাণিত করলেন কেরালার ৭১ বছরের বৃদ্ধা রাধামণি আম্মা। শুধু তাই নয়, তার সাথে তিনি তৈরি করেছেন এক বিরল কৃতিত্বও। সেই কৃতিত্বের বিচারে বর্তমানে সমগ্র দেশেই এখন তাঁর কোনো সমকক্ষ নেই।

জানা গিয়েছে যে, রাধামণি আম্মার কাছে এখন রোড রোলার্স, JCB, এক্সকাভেটরের মত ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স রয়েছে। তবে শুধু লাইসেন্সই নয়, বরং তিনি এই যানবাহনগুলি দক্ষতার সাথে নিয়মিত চালানও। আর এভাবেই রেকর্ড তৈরি করেছেন তিনি। মূলত, ১৯৭৮ সালে তাঁর স্বামী দেবী লাল একটি ড্রাইভিং স্কুল শুরু করেছিলেন। এমতাবস্থায় তিনিই রাধামণিকে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।

আর তারপর থেকেই রাধামণি আম্মার কাছে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চালানো একপ্রকার নেশার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুযোগ পেলেই তিনি নিত্য-নতুন গাড়ি চালাতে থাকেন। আর সেই তালিকায় থাকে বিভিন্ন ভারী যানবাহনও। রাধামণি এমন একটা সময়ে ড্রাইভিং শিখেছিলেন যখন অন্যান্য মহিলারা এটি কল্পনাও করতে পারতেন না। অনেকেই তাঁকে গাড়ি চালাতে দেখে তাঁর সমালোচনা করলেও তিনি সেসব পাত্তা না দিয়েই সাহস অবলম্বন করে এই কাজ শুরু করেছিলেন।

জানা গিয়েছে যে, তিনি প্রথমে বাস এবং লরি চালানো শিখেছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে তিনি রোড রোলার্স, JCB, এক্সকাভেটরের মত বড় যানবাহন চালাতে থাকেন। আপাতত তাঁর কাছে ১১ ধরণের বড় যানবাহন চালানোর লাইসেন্স রয়েছে। ২০০৪ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর রাধামণি আম্মা ড্রাইভিং স্কুলটি নিজে পরিচালনা করতে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি দেশের একমাত্র মহিলা যাঁর কাছে ৭১ বছর বয়সে ১১ ধরণের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স রয়েছে।

WhatsApp Image 2022 05 31 at 8.16.51 PM

যদিও, রাধামণি আম্মা এখানেই থেমে যেতে নারাজ। বরং, তিনি এখন টাওয়ার ক্রেন চালানোর জন্য উদ্যোগ নিচ্ছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, রাধামণি আম্মা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমাও করছেন। পাশাপাশি, তাঁর হাত ধরেই বহু মহিলা এখন ভারী যানবাহন চালাতে শুরু করেছেন। এছাড়াও এই কাজকে পেশা বানিয়েও তাঁরা অর্থ উপার্জন করছেন। এমতাবস্থায়, রাধামণি আম্মার প্রসঙ্গ সামনে আসতেই তাঁর জেদ এবং সাহসকে কুর্ণিশ জানিয়েছেন সকলেই।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর