রাজ্যে বিমানবন্দরের ধাঁচে হওয়ার কথা ছিল অত্যাধুনিক রেল স্টেশন, কিন্তু সেটাই এখন পোড়ো বাড়ি!

বাংলা হান্ট ডেস্ক: হওয়ার কথা ছিল বিমানবন্দরের ধাঁচে অত্যাধুনিক রেল স্টেশন। কিন্তু, সময়ের সাথে সাথে তা কার্যত পরিণত হয়েছে ভূতের বাড়িতে। অদ্ভুত শোনালেও ঠিক এইরকমই এক ঘটনা ঘটেছে আমাদেরই রাজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে।

২০১৯ সালে এই স্টেশন ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মত ভারতীয় রেলের তরফে অনুমোদন করা হয় অর্থও। কিন্তু দু’বছরের মধ্যেই সেই কাজে পড়েছে ভাটা। যার জেরে ভর্তি আগাছা আর জঙ ধরা মেশিন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সাঁতরাগাছি স্টেশন। কোণা এক্সপ্রেসওয়ের ধারের সাঁতরাগাছি স্টেশন এখন কার্যত রূপ নিয়েছে পোড়ো বাড়ির।

এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে এস আনন্দ জানিয়েছেন যে, “করোনা পরিস্থিতির জন্যে কাজের গতি শ্লথ হয়েছে। যদিও, ধীরে ধীরে সেই কাজ ক্রমশ করা হচ্ছে। চলতি বাজেটে এই প্রকল্পের জন্যে মঞ্জুর করা হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।” পাশাপাশি, রেলের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, কাজ এগোতে থাকলে অর্থের অভাব হবে না।

এদিকে আরও জানা গিয়েছে যে, করোনা পরিস্থিতিতে রেলের ভাঁড়ার প্রায় শুন্য। স্বাভাবিকভাবেই, বর্তমানে যে সব প্রকল্পের খুব একটা প্রয়োজন নেই সেই গুলির কাজ থমকে গিয়েছে। যদিও, এই বিল্ডিংয়ের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেলে তা ব্যবসায়ীদের দেওয়ার কথা ছিল স্টেশনে রিটেল আউটলেটের জন্য। কিন্তু, মহামারীর আবহে সেদিকেও আগ্রহ প্রকাশ করছেন না অনেকেই। ফলে আটকে যাচ্ছে নতুন স্টেশন ভবনের মানোন্নয়নের কাজ।

এমতাবস্থায়, এই প্রকল্পের কাজ কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সঠিক উত্তর নেই কারও কাছে। এদিকে, প্রকল্পটির জেরে সমগ্র এলাকা জুড়ে যত্রতত্র মেশিন এবং যন্ত্রাংশ পড়ে রয়েছে। দিনের আলোতেও এই এলাকায় ঢুকলে একটা গা-ছমছমে ভাব কাজ করে।

এদিকে, হাওড়া স্টেশনের বিকল্প হিসাবে যে সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাজ শুরু হয়েছিল, তার গতি হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যদিও দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে যে, ধীরে ধীরে এর কাজ শেষ করা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ পূর্ব রেলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল সাঁতরাগাছি।

download 11 2

রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামীদিনে এই স্টেশনকে হাওড়ার বিকল্প স্টেশন হিসাবে গড়ে তোলার ভাবনা নিয়েছে ভারতীয় রেল। আর এই কাজের জন্যেই নির্মাণ করা হয় বহুতলটির। পাশাপাশি, পরিকল্পনা ছিল যে, এক্কেবারে বিমানবন্দরের ধাঁচে যাত্রীদের নিয়ে গাড়ি এসে থামবে স্টেশনের ওপরে।

তারপরে যাত্রীদের নামিয়ে গাড়ি সোজাসুজি চলে যাবে কোণা এক্সপ্রেসওয়েতে। সেই কারণে রাস্তার পাশে চলছিল ব্রিজ তৈরির কাজও। জানা গিয়েছে যে, যে সংস্থাটি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছিল তারাও আপাতত কাজ স্থগিত রেখেছে। এছাড়াও, যে বহুতল টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল তাও থমকে গিয়েছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর