বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের রাজনীতিতে ধর্ম নিয়ে চর্চা করা নতুন কিছু নয়। তবে বিগত কয়েক বছরে এই চর্চার হার খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বার রাজস্থানের বিধানসভায় ধর্ম নিয়ে বিরাট দাবি করলেন কংগ্রেসের (Indian National Congress) দু’জন মুসলিম বিধায়ক। নিজেদের রাম ও কৃষ্ণের বংশধর বলে দাবি করলেন তাঁরা। বিধায়ক সাফিয়া জুবেরের (Shafia Zubair) দাবি, তাঁদের মেও সম্প্রদায় আসলে রাম ও কৃষ্ণেরই বংশ।
নিজেদের অতীতের বিষয়ে জানার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছিলেন তিনি। তারপর তাঁদের থেকে ইতিহাস ঘেঁটে অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন বলে দাবি তাঁর। সেখানেই উঠে এসেছে যে মেও সম্প্রদায় আসলে রাম ও কৃষ্ণেরই বংশ। অর্থাৎ সেই হিসেবে তিনি রাম ও কৃষ্ণের বংশধর। তাঁর আরও দাবি, কোনও এক সময় তাঁদের ধর্ম পরিবর্তন হয়েছিল।
সাফিয়া বলেন, “ধর্ম পরিবর্তন হলেও রক্ত তো বদলাবে না। সেই হিসেবে আমরা রাম ও কৃষ্ণেরই বংশধর।” এই বক্তব্যের পর অনেক বিধায়কই টেবিল চাপড়ে তাঁকে সমর্থন জানান। জানিয়ে রাখি, সাফিয়া জুবের মুসলিম হলেও হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করেন। সব সময়েই তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জীবনযাপন করেন। গত বছর শ্রাবণ মাসে দেবস্থান মন্ত্রী শকুন্তলা রাওয়াতের সঙ্গে ভগবানের শিবের পুজো ও জলাভিষেক করেছিলেন সাফিয়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ছবি ভাইরালও হয়েছিল।
রাজস্থানের (Rajasthan) আলওয়ার জেলার রামগড়ের বিধায়ক হলেন সাফিয়া। বিজেপির সুখবন্ত সিংহকে ১২ হাজার ভোটে হারিয়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেসের রাষ্ট্রীয় সচিব জুবের খানের স্ত্রী হলেন সাফিয়া খান। অনুদানের দাবিতে আলোচনার সময় রামগড়ের এই কংগ্রেস বিধায়ক বলেছিলেন যে আলওয়ার, ভরতপুর, নুহ এবং মথুরায় মেওরা থাকেন। সেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল।
মেওদের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় বলে সম্বোধন করতে মানা করেন তিনি। সাফিয়া বলেন যে এই মুহূর্তে তিনজন বিধায়ক থাকলেও আগামী ১০ বছরে বিধায়কের সংখ্যা আরও বাড়বে। অন্যদিকে, বাড়মের জেলার শিব বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক আমিন খান বলেন ৩১ অক্টোবর ১৯৮৪-র পর ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে মানতে নারাজ তাঁরা।
তিনি আরও বলেন যে ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হয়ে গেলেও তাঁদের কোনও ভয় নেই। তাঁদের কেউ মারবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। আমিন খান আরও বলেন, হিন্দু ধর্মকে তিনি ভাল করেই জানেন। হিন্দুরাও অন্যদের রক্ষা করবেন বলে দাবি তাঁর। কিন্তু ভারত শুধু খাতায় কলমেই ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আমিন জানিয়েছেন, রাজস্থানের প্রতিটি স্কুলে একটি সম্প্রদায়ের নামে পুজো হয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। এটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশের শক্তির চিহ্ন নয়।