বাংলাহান্ট ডেস্ক : দেশজুড়ে যখন ধর্মীয় অসন্তোষ, জাতপাতের লড়াই মাঝেমধ্যেই মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে; ঠিক তখনই সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি করতে রাজস্থান (Rajasthan) সরকারের তরফ থেকে এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হলো। সরকারের তরফ থেকেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে যে, যারা ভিন্ন ধর্ম কিংবা ভিন্ন জাতের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে (Marriage) আবদ্ধ হবেন তাদেরকে দেওয়া হবে ১০ লাখ টাকা। সরকার নব দম্পতির জয়েন্ট অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেবে সেই টাকা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশবাসীর মনে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও এখনো পর্যন্ত বহু মানুষই বিবাহ সংক্রান্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে পুরনো ধ্যানধারণাকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চান। তাই আজও জাত ধর্ম নিয়ে বৈষম্যের ছবিটা পুরোপুরি মুছে যায়নি। এমনকি, উচ্চবর্ণের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করলেও বহু ক্ষেত্রেই নিম্নবর্গের মানুষদের তোপের মুখে পড়তে হয়। এছাড়াও, ‘লাভ জিহাদ’ প্রসঙ্গে তোপ দাগেন উগ্র হিন্দুত্ববাদীরাও।
তবে এই প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, সুপ্রিম কোর্টের তরফে বহু ক্ষেত্রেই বারবার বলা হয়েছে পারস্পরিক সম্মতি থাকলে জাত কিংবা ধর্ম যে যুগলের মিলনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আর এবার সেই মতকে জনপ্রিয় করে তুলতেই নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজস্থানের প্রশাসন। তবে রাজস্থান সরকারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বহুবিবাহের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। সে কারণেই মুসলিমদের আপাতত এই প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে না।
এই উদ্যোগের ফলে একই ধর্মের মধ্যে উঁচু-নিচু ভেদাভেদও কমতে পারে বলেই মনে করছে রাজস্থানের সরকার। রাজস্থানের প্রশাসনের তরফে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই ওয়াকিবহাল মহল বাংলায় বিধবাবিবাহ প্রচলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বিদ্যাসাগর ঘোষণা করেছিলেন, প্রতিটি বিধবাবিবাহের পর নবদম্পতিকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা যৌতুক হিসেবে দেবেন তিনি। রাজস্থানবাসীর মতে, সরকারের এই উদ্যোগ যেন ফের ঈশ্বরচন্দ্রের কথাই মনে করিয়ে দেবে।