বাংলাহান্ট ডেস্ক: ক্রেনের সাহায্যে জিনিসপত্র এদিক ওদিক করা অতি সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু তাই বলে গোটা একখানা ঘর! হ্যাঁ, এমনই অভূতপূর্ব একটি ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের বারমেরের সিন্ধারি মহকুমার কারদালি নাডি গ্রামে। হাইড্রা ক্রেনের সাহায্যে একটি আস্ত কুঁড়েঘরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছেন পুরখারাম নামের এক ব্যক্তি।
এই প্রসঙ্গে কারদালি গ্রামের বাসিন্দা পুরখারাম জানিয়েছেন, ৫০ বছর আগে এই কুঁড়েঘরটি তাঁর ঠাকুরদা বানিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ঘরটির ভিত দূর্বল হয়ে পড়ায় ঘরটি যাতে ভেঙে না পড়ে, তার জন্যই সরিয়ে নেওয়া হল সেটিকে। মূলত উইপোকার কারণেই দূর্বল হয়ে গিয়েছিল কুঁড়েঘরটির ভীত।
পুরখারাম আরও বলেন, ‘এই রকম একটি ঘর তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু এই ঘরটির ছাদ সারিয়ে নিলে এই কুঁড়েটিই ভালোভাবে আরও ৩০-৪০ বছর চলবে। এমনকি ভালো ভাবে মেরামত করলে আগামী ১০০ বছরেও অটুট থাকবে ঘর। তাছাড়াও এই ঘর নতুন করে তৈরি করতে হলে সময় লাগে ২-৩ দিন। এখনকার কেউই আর এমন ঘর তৈরি করতে জানেন না,সেই কারণেই ৮০ হাজারের বদলে মাত্র ৬ হাজার টাকা খরচ করে ঘরটিকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই’।
রাজস্থানের মরু অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাপমাত্রা গিয়ে পৌঁছায় ৪৫° সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সেই সময় গ্রামবাসীদের পক্ষে এসির বন্দোবস্ত করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কিন্তু এই ঘরগুলি প্রাকৃতিক ভাবেই শীততাপনিয়ন্ত্রকের কাজ করে। মাটির সঙ্গে গোবর মিশিয়ে দেওয়াল বানিয়ে তার উপর দেওয়া হয় তুঁষের প্রলেপ। ঘরগুলির ছাদ তৈরি হয় আখ, বাজরা, খিম্প বা চাং ঘাস দিয়ে। এভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে বানানোর কারণে গরমেও অত্যন্ত শীতল থাকে ঘরের ভিতরের পরিবেশ।
পুরখারামের এহেন কান্ডের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই মুহুর্তেই ভাইরাল হয় তা। ৮০ হাজার টাকার বদলে ৬ হাজার টাকা খরচে তাঁর এমন বুদ্ধিকে কার্যতই সাধুবাদ জানিয়েছেন নেটিজেনরা।