‘মা ওঠো না গো” হাসপাতালে বেডে মায়ের দেহ ঠেলে চলেছে দুই বছরের মেয়ে, পাশেই খেলছে তিন মাসের ভাই

বাংলাহান্ট ডেস্ক : হাসপাতালের বিছানায় রাখা রয়েছে এক মহিলার মৃতদেহ। তার দু বছরের শিশুটি বোঝেনি এত কিছু। শিশুটি বারবার তার হাত দিয়ে ঠেলা মারছে তার মায়ের গায়ে, আর বারবার একটাই কথা, “ও মা, ওঠো না ওঠো!” মা যখন এত ডাকাডাকিতেও সাড়া দিচ্ছে না, তখন শিশুটি মায়ের গায়ের চাদর ধরে টানতে লাগলো। আর সেই মৃত মহিলার পাশে বসে তারই আরেক তিন মাসের সন্তান এক দৃষ্টিতে দেখছে সবকিছু। সম্প্রতি এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকলো রাজস্থানের একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র।

দুই বছরের ছোট্ট মেয়ের কাতর আর্তিতেও সাড়া দেননি মা। কারণ ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে সেই মহিলার। মাকে এতবার করে ডাকার পরেও সাড়া না পেয়ে চাদর ধরে টানতে টানতে শিশুটি “মা, মা” বলে ফুঁপিয়ে ওঠে। এরপর শিশুটির দিদা শিশুটিকে বলে, “মাকে জ্বালাতন করিস না, মা ঘুমাচ্ছে।” রাজস্থানের টঙ্ক জেলার নইনওয়া শহরের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই ঘটনা রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, মহিলার মৃত্যুর ছয় ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালের বেডে ফেলে রাখা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, পুলিশ না আসা পর্যন্ত দেহ সরানো যাবে না। এরপর দীর্ঘ ১৫ কিমি রাস্তা অতিক্রম করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুলিশ এসে উপস্থিত হলে সরানো হয় মহিলার মৃতদেহ।

woman body rajasthan

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত মহিলার নাম শাবানা। গত শনিবার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে মহিলার ভাই তাকে নিয়ে কোটার উদ্দেশে রওনা হন। সাথে ছিলেন শাবানার মা ও তার দুই সন্তান। এক সন্তানের বয়স দুই বছর, অপর সন্তানের বয়স তিন মাস। মাঝ রাস্তায় শাবানার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার ভাই তাকে ভর্তি করেন নইনওয়ার একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। কিন্তু পুলিশ আসতে দেরি করায় মৃতদেহ ফেলে রাখা হয় হাসপাতালের বেডেই। দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা পর পুলিশ উপস্থিত হলে শাবানার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর