বাংলা হান্ট ডেস্ক: “প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর” কথাটা শুনলেই আমাদের মাথায় আসে ফেলুদা’র নাম। জটায়ু এবং তোপসেকে নিয়ে ফেলুদার একের পর এক রুদ্ধশ্বাস কাহিনি আমরা সকলেই জানি। কিন্তু, আজ যাকে নিয়ে আমরা আলোচনা করবো তিনিও একজন “প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর”! ইতিমধ্যেই তিনি সমাধান করে ফেলেছেন প্রায় ৮০ হাজারেরও বেশি কেস! এই অসাধ্য সাধন যিনি করেছেন তাঁর নাম হল রজনী পন্ডিত। দেশের প্রথম মহিলা গোয়েন্দার তকমাও পেয়েছেন তিনি। তাঁর অনন্য দক্ষতার কারণে তাঁকে “লেডি জেমস বন্ড” বলেও ভূষিত করা হয়েছে।
মাত্র ২২ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন জটিল কেসের সমাধান করছেন রজনী। ১৯৬২ সালে মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। রজনীর বাবা ছিলেন সিআইডির একজন আধিকারিক। তাই, ছোটবেলা থেকেই রজনী বিভিন্ন জটিল কেসের সমাধান এবং সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন খুঁটিনাটি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছিলেন। এক্কেবারে প্রথমদিকে যেই অফিসে রজনী কেরানির চাকরি করতেন সেই অফিসেই প্রথম কেসের নিষ্পত্তি করেন তিনি। তারপর থেকেই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। বিভিন্ন জটিল জটিল কেস ক্রমশ ভিড় করতে শুরু করে তাঁর কাছে।
গোয়েন্দা হিসেবে কেসের সমাধানের প্রয়োজনে তিনি মাঝে মাঝেই বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে পাল্টে ফেলতেন। কখনও বাড়ির কাজের লোক, আবার কখনও সন্তানসম্ভবা নারীর ভূমিকায় নিজেকে নিয়ে গিয়ে এক্কেবারে সামনে থেকে দোষীদের ধরিয়ে দিতেন তিনি। এরজন্য কখনও কখনও বড়ো বিপদের সম্ভাবনা থাকলেও সেসবেকে পাত্তা না দিয়েই নিজের কাজে স্থির থাকতেন রজনী।
এমন পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান কেসের সমাধানের জন্য ১৯৯১ সালে তিনি একটি গোয়েন্দা সংস্থা খোলেন, যেখানে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে যেতেন। এদিকে, জটিল সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি তিনি লিখেছেন “ফেসেস অ্যান্ড মায়াজাল” নামের একটি বই। যেখানে কেস সমাধান সংক্রান্ত একাধিক বিষয় উপস্থাপিত করেছেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে তথ্যচিত্রও। তাঁর কাজকে সম্মান জানিয়ে তিনি পেয়েছেন একাধিক পুরস্কারও। ইতিমধ্যেই তিনি দূরদর্শন কর্তৃক হিরকানি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও তিনি সর্বাধিক বিখ্যাত গোয়েন্দা সহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।