বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত নিজেকে কৃষকদের নেতা বলেই পরিচয় দেন। তিনি কৃষকদের স্বার্থে লড়াই করার কথা বলেন। কিন্তু দেশের এই কৃষক নেতার সম্পত্তির বিষয়ে জানলে আপনি অবাক হবেন। একদিকে কৃষকদের যখন মাসিক আয় ৬ হাজার ৪০০ টাকা। তখন আরেকদিকে এই কৃষক নেতার সম্পত্তি কয়েক কোটি।
বেশীরভাগ কৃষক ৬ মাস চাষ করে আর ৬ মাস বেকার থাকে। কৃষকরা নিজেদের রক্ত দিয়ে গোটা দেশের জন্য চাষাবাস করে, আর এই কৃষকদের দুঃখ দারিদ্রতার কথা গোটা দেশই জানে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে ১০০ জনের মধ্যে ৫২ জন কৃষকের মাথায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকার ঋণ আছে। ২০১৬ সালে ১০ হাজার কৃষক ঋণের দায়ে নিজের প্রাণ দিয়েছিল। দেশের ৭৬ শতাংশ কৃষক চাষাবাস ছেড়ে অন্য কিছু করতে চায়। গ্রামীণ ভারতে মাত্র ১ শতাংশ যুবকই এখন কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়।
রাকেশ টিকাইতের ৪ টি রাজ্য সম্পত্তি আছে। উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, দিল্লী আর মহারাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাকেশ টিকাইত দেশের ১৩ টি শহরে নিজের সম্পত্তি বানিয়ে রেখেছেন। মুজফরনগর, ললিতপুর, ঝাঁসি, লক্ষ্মীপুর খেরি, বদায়ুন, দিল্লী, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, দেরাদুন, রুড়কি, হরিদ্বার আর মুম্বাই শহরে রাকেশবাবুর সম্পত্তি আছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রাকেশ টিকাইতের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮০ কোটির মতো।
রাকেশবাবু প্রায় দুমাস ধরে দিল্লীর গাজীপুর বর্ডারে ধরনা প্রদর্শনকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এই ধরনা প্রদর্শনের সময়ে আন্দোলনরত কৃষকদের রোজগার না হলেও, ওনার ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠছে। ওনার কোটি টাকার সম্পত্তি আরও বেড়ে চলেছে।
রাকেশ টিকাইত দিল্লী পুলিশের একজন সাধারণ কনস্টেবল ছিলেন। তখন থেকেই তিনি কৃষকদের নেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তবে চাষাবাস শুধু টিকাইতের সাম্রাজ্যের একটি ভাগ মাত্র। অন্যদিকে ওনার আরও অনেক ব্যবসা আছে। আর সেই ব্যবসা চালানোর জন্য কৃষক না, একজন নেতা হওয়ার দরকার পড়ে। ৫১ বছর বয়সী রাকেশ টিকাইত ১৯৮৫ সালে বিয়ে করেছিলেন। ওনার তিনটি সন্তান আছে। একটি পুত্র সন্তান আর দুটি কন্যা সন্তান।
টিকাইতের দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। টিকাইতের ছোট মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে ৮ ফেব্রুয়ারি কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে একটি র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানে রাকেশ টিকাইতের মেয়ে সশরীরে হাজির হয়েছিলেন।
একদিকে রাকেশ টিকাইত নিজেকে কৃষকদের নেতা বলেন, আরেকদিকে তিনি অবৈধ ভাবে হরিণ পোষেন। জানিয়ে দিই, ভারতে হরিণ সমেত সমস্ত বন্য পশু পোষণ করা অপরাধ। এই আইন অমান্য হলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আর ৭ বছরের সাজার নিদান আছে।