বাংলা হান্ট ডেস্ক : মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! থরে থরে সাজানো রয়েছে মৃতদেহ। নিঃস্ব হয়ে গেছে অসংখ্য পরিবার। কেউ হারিয়েচে নিজের বাবাকে, কেউ বা মা’কে। কারও বাবা-মা ভাগ্যের জোরে প্রাণরক্ষা পেলেও গুরুতর চোট পেয়েছেন। আর সেই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করেই ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় (Odisha Train Accident) ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য নিজেদের দরজা খুলে দিল রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ব্যারাকপুর (Ramakrishna Mission Barrackpore)।
ওড়িশায় রেল দুর্ঘটনার জেরে যে শিশুরা অনাথ হয়ে গিয়েছে বা যে শিশুদের অভিভাবকরা আহত হয়েছেন ও কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন, তাদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া হবে বলে জানান রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ব্যারাকপুরের প্রধান সচিব স্বামী নিত্যরূপানন্দজি মহারাজ।
স্বামী নিত্যরূপানন্দজি মহারাজ টুইট করে বলেন, ‘ওড়িশার বালাসোরে সম্প্রতি যে রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার জেরে যে শিশুদের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে বা যে শিশুরা অনাথ হয়ে গিয়েছে, তাদের সকলের দেখভালের দায়িত্ব বিনামূল্যে নিতে পারে রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ব্যারাকপুর। দয়া করে সকলকে এটা জানিয়ে দিন।’
স্বামী নিত্যরূপানন্দজি মহারাজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ মিশন ব্যারাকপুরের প্রধান সচিব জানান, ওড়িশায় যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে মর্মাহত এবং শোকস্তব্ধ তিনি। সেই দুর্ঘটনায় অনেক শিশুর ভবিষ্যৎ ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। দুর্ঘটনায় হয়ত কারও বাবা-মা মারা গিয়েছে। কারও বাবা-মায়ের জীবন রক্ষা পেলেও তাঁরা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন। পরিবারের উপর আর্থিক সংকট নেমে আসতে পারে। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে ওড়িশার দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৪ বছর পর্যন্ত ছেলে ও মেয়েদের যাবতীয় দায়িত্বভার গ্রহণ করবে রামকৃষ্ণ মিশন।
স্বামী নিত্যরূপানন্দজি মহারাজ জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রামকৃষ্ণ মিশনের অনাথ আশ্রম আছে। ওড়িশার বালাসোরে রামকৃষ্ণ মিশনের একটি অনাথ আশ্রম রয়েছে। সেখানে শুধু ছেলেরা থাকতে পারবে। তাছাড়া ঝাড়খণ্ডের মধুপুরে অনাথ আশ্রম আছে। সেখানেও শিশুরা থাকতে পারে। তবে কোন শিশু কোথায় থাকবে, তা আলোচনার ভিত্তিতে ঠিক করা হবে বলে জানান স্বামী নিত্যরূপানন্দজি মহারাজ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় বালাসোরের বারানগা বাজার স্টেশনের কাছে আকরিক লোহা বোঝাই একটি মালগাড়িতে ধাক্কা মারে আপ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। তার জেরে লাইনচ্যুত হয়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক কোচ। কয়েকটি কোচ ছিটকে অন্য লাইনে চলে যায়। সেইসময় উলটোদিক থেকে আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডলের কোচে ধাক্কা মারে হাওড়াগামী ট্রেন। লাইনচ্যুত হয়ে যায় ওই ট্রেনেরও কয়েকটি কোচ।