বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভেদাভেদের এই সমাজে রামকৃষ্ণ (Ramkrishna) পরমহংসের মতো মহামানবদের বাণী আজও কিছুটা হলেও আশার আলো দেখায়। ‘যত মত তত পথ’ আশ্রয় দেয় সমাজের লাঞ্ছিত-নিপীড়িত মানুষদের। তবে শুধু কথার মাধ্যমে নয়, নিজের কাজের মাধ্যমেও সর্বধর্ম সমন্বয়ের এক মিলনক্ষেত্র তৈরি করে গিয়েছিলেন যুগাবতার রামকৃষ্ণ পরমহংস।
রামকৃষ্ণের (Ramkrishna) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ
রামকৃষ্ণ আর দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar) একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তবে জানেন চিরকাল মা ভাবতারিণীর সেবা করে আসা রামকৃষ্ণ পরমহংস দীক্ষিত হয়েছিলেন ইসলাম ধর্মে? শোনা যায়, রামকৃষ্ণ পরমহংস ইসলাম (Islam) ধর্মে (Religion) মনোনিবেশ করেছিলেন ১৮৮৬-৮৭ সাল নাগাদ। ইসলাম ধর্মে রামকৃষ্ণের গুরু ছিলেন গোবিন্দ রায়।
বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া গোবিন্দ রায় ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর গোবিন্দ রায়ের নাম হয়েছিল ওয়াজেদ আলি খান। সেই গোবিন্দ রায় ওরফে ওয়াজেদ আলি খানের কাছেই ইসলাম মতে দীক্ষা নিয়েছিলেন রামকৃষ্ণ। জানা যায়, সেই সময় রামকৃষ্ণ তাকাতেন না দেব-দেবীর বিগ্রহের দিকে।
আরোও পড়ুন : তৃণাঙ্কুর জমানার অবসান! তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নয়া সভাপতি হচ্ছেন সুদীপ রাহা? জল্পনা তুঙ্গে
অহিন্দুদের মতো বসবাস করতেন মন্দিরের বাইরে। মসজিদ যেতেন। পাঠ করতেন নামাজ। সেই সময় ঠাকুর রামকৃষ্ণ একবার বলেছিলেন, , ‘গোবিন্দ রায়ের কাছে আল্লা মন্ত্র নিলাম। কুঠিতে প্যাঁজ দিয়ে রান্না ভাত হলো। খানিক খেলুম।’ শোনা যায়, রামকৃষ্ণ (Ramkrishna) নাকি গোমাংস ভক্ষণের ইচ্ছাও পোষণ করেছিলেন।
যদিও মথুর বাবুর অনুরোধে সেই ইচ্ছা ত্যাগ করেন ঠাকুর। রামকৃষ্ণ নানা মতের মধ্যেই খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন নানান পথ, যে পথের শেষ শুধুই মানবতায়। তাই শুধু ইসলাম নয়, তিনি জীবদ্দশায় খ্রিস্ট ও বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেও সিদ্ধিলাভ করেন। সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষের কাছে যে বার্তা রামকৃষ্ণ সেদিন দিয়ে গিয়েছিলেন, তা আজও পাথেয় প্রতিটি মানুষের জীবনে।