বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনে (Ramkrishna Mission) হামলার ঘটনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। গত ১৮ মে মিশনের মধ্যে ঢুকে সেখানকার সন্ন্যাসী এবং কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল ‘জমি হাঙর’দের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগ দায়ের করে মিশন কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের ভিত্তিতে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায় অধরাই ছিলেন। পুলিশের খাতায় তিনি ‘ফেরার’। তবে এবার তিনিই থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করলেন।
সম্প্রতি ‘ফেরার’ প্রদীপ এসে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের তরফ থেকে সেটি এফআইআর (FIR) হিসেবে গ্রহণও করা হয়েছে। এবার পুলিশের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। তিনি বলেন, প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা তো দূর, উল্টে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়াগরাজের মহারাজ অক্ষয়ানন্দজির নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
স্বামী সুবীরানন্দের কথায়, ‘এটা খুবই বেদনাদায়ক যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার বদলে পুলিশ তাঁর মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের প্রয়াগরাজের মহারাজ অক্ষয়ানন্দজির বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় এফআইআর দায়ের করেছে’। এখানেই না থেমে তিনি বলেন, মহারাজ অক্ষয়ানন্দজি বিগত ৭-৮ বছর ধরে জলপাইগুড়িতে থাকেন না। অথচ তাঁর নামেই কিনা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে! এবার পুলিশের এই ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ অভিষেকের সভার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নন্দীগ্রামে মহিলা BJP কর্মীকে কুপিয়ে খুন, আহত সাত
গত ১৮ মে-র হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে মিশন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, প্রদীপ রায় বলে একজন ব্যক্তি তাঁর বাহিনী নিয়ে মিশনের মধ্যে হামলা চালিয়েছিল। সন্ন্যাসীদের হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে মারধর, সবই হয়েছে সেদিন। আশ্রম থেকে বেরনোর সময় দু’জন নিরাপত্তারক্ষী সহ ৫ জন কর্মীকে তুলে নিয়ে হামলাকারীরা। যদিও মূল অভিযুক্ত প্রদীপের দাবি, ওই জমিটি উত্তরাধিকার সূত্র তাঁর পাওয়া।
বুধবার এই প্রসঙ্গে ডেপুটি পুলিশ সুপার সাংবাদিক বৈঠক করে অবশ্য জানিয়েছেন, প্রদীপের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রামকৃষ্ণ মিশনের নামেই ওই জমির মালিকানা রয়েছে। এবার স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এতকিছুর পরেও কেন মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল না পুলিশ? তিনি যখন থানায় অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন, সেই সময়ও বা কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হল না? এমন নানান প্রশ্ন দেখা দিলেও এখনও অবধি কোনও সদুত্তর মেলেনি।