‘দুটো বাড়ি জ্বলতে দিন না, আনারুলকে ফোনে বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল!” বিস্ফোরক সৌমিত্র খাঁ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এখনও অগ্নিগর্ভ রামপুরহাট। বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ড ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এরই মধ্যে আজ রামপুরহাটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়েই ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন তিনি। এরপরই প্রথমে তাঁর বাড়িতে চলে পুলিশ অভিযান। সেখানে আনারুলের বদলে দেখা মেলে তাঁর অনুগামীদের। এমনকি বিক্ষোভ-প্রতিরোধের মুখেও পড়তে হয় পুলিশকে। এরপর মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ট্র‍্যাক করে তারাপীঠের একটি হোটেল সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। তাঁর অনুগামীদের ঘোরতর অভিযোগ, নিজের পিঠ বাঁচাতে আনারুলকে ফাঁসাচ্ছেন খোদ অনুব্রত মণ্ডল।

এহেন রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে বিতর্কিত বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা গেল বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। এদিন আনারুলের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন এই বিজেপি নেতা। তাঁর বক্তব্য, ‘পশ্চিমবঙ্গ আজ আতঙ্কবাদী রাজ্য। ওখানে আনারুল যে ব্লক প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আনারুল সেই সময় অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেছিল, অনুব্রত মণ্ডল সেই সময় বলেছিল কয়েকটি বাড়ি জ্বালিয়ে দাও। এই জায়গাটা কেন ধরা হচ্ছে না? আনারুল ফোন করেছিল অনুব্রত মণ্ডলকে দায়িত্বের সঙ্গে বলছি। সেই সময় ফোন নম্বর চেক করা হোক। অনুব্রত মণ্ডল এসডিপিওকে বলেছিল, আপনি কোথাও যাবেন না। আইসিকে বলেছিল, দুটো বাড়ি জ্বলতে দিন। কোথাও যাবেন না। এই কথাটা মোবাইলে আছে। কেন তদন্ত করা হচ্ছে না। কেন প্রকাশ্যে আসছেন না?’

   

তাঁর এহেন মন্তব্যকে ঘিরে যে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে তা বলাই বাহুল্য। এই ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে রাজি হননি অনুব্রত মণ্ডল।

এদিন অনুব্রতকে নিয়েই রামপুরহাটে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ক্ষতিপূরণ স্বরূপ টাকা এবং সরকারি চাকরি দেওয়া হয় মৃত এবং আহতদের পরিবারকে। বাড়ি মেরামতির জন্যও দেওয়া হয় টাকাও। কিন্তু ক্ষতিপূরণ নয়, বরং দোষীদের শাস্তির দাবিতেই সোচ্চার হয়েছেন এক নিহতের আত্মীয় মিহিলাল শেখের। এদিন তিনি বলেন, ‘শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, দোষীদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে জামিন না পায় কেউ। যাতে সেই শাস্তি দেখে দেশের কেউ আর কখনও এরকম অপরাধ করার সাহস না পায়। আমাদের ক্ষতিপূরণটা বড় কথা নয়। আমাদের পরিবারকে যারা শেষ করেছে তাদেরকেও শেষ করতে হবে।’ তবে তাঁকে এও বলতে শোনা যায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ইচ্ছেয় যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়েছেন সেটাও নিয়েছি। উনি বলেছেন মৃতদের পরিবার পিছু চাকরি দেওয়া হবে সেটাও আমরা নিয়েছি।’ কিন্তু এত কিছুর পরও শাস্তির দাবীতেই অনড় তিনি।

রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে প্রতিদিনই উন্মোচিত হচ্ছে একের পর এক রহস্যের পরত। চলছে অভিযোগ প্রতি অভিযোগের কাদা ছোঁড়া ছুঁড়ি। শেষমেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এই মামলা এখন সেটাই দেখার।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর