বাংলা হান্ট ডেস্ক: কঠোর পরিশ্রম, গভীর নিষ্ঠা এবং মেধার ওপর ভর করে যে বিরাট সফলতা হাসিল করা সম্ভব তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন মুর্শিদাবাদের সাগরদীঘির সুখীর বাসিন্দা বিশাখ মন্ডল। শুধু তাই নয়, সমস্ত বিতর্কে কার্যত জল ঢেলে বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনা করেও যে ফেসবুক ও গুগলের মত মহীরুহ সংস্থার কাছ থেকে চাকরির প্রস্তাব পাওয়া যেতে পারে তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি, তিনি হয়ে উঠেছেন এক দৃষ্টান্তও। এমতাবস্থায় প্রথমে জানা গিয়েছিল যে, বার্ষিক ১.৮ কোটি টাকার চাকরির প্রস্তাব পেয়ে তিনি যোগ দেবেন মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা ফেসবুকে। যদিও, এবার সেই সিদ্ধান্তেই বদল আনছেন বিশাখ। বরং, ফেসবুকের পরিবর্তে তিনি বেছে নিয়েছেন গুগলকেই। শুধু তাই নয়, আগামী অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই তিনি সেখানে কাজে যোগ দেবেন বলেও জানা গিয়েছে।
মূলত, গত শনিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাতঃভ্রমণকারীদের একটি সংগঠন “সাতসকাল” এবং “বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন”-এর উদ্যোগে সম্পন্ন হওয়া একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজেই এই সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানিয়েছেন বিশাখ। পাশাপাশি, তিনি বলেন যে, ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ মিটে গেলেই তিনি অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ যোগ দেবেন গুগলে। মূলত, সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে তিনি কাজ করবেন সেখানে।
যদিও, কেন তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন এই প্রশ্নের উত্তরে বিশাখ জানান যে, “আমার কাছে গুগল ও ফেসবুক দুই সংস্থার কাছ থেকেই চাকরির অফার আসে। আমি প্রথমে ঠিক করেছিলাম যে ফেসবুকেই যোগদান করব। যদিও, পরবর্তীকালে গুগলে যোগদান করার বিষয়ে মনস্থির করেছি। পাশাপাশি, গুগলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনেক সুযোগও রয়েছে।” এছাড়াও, প্যাকেজ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, “গুগলও আমায় ভালো অঙ্কের অফার অবশ্যই দিয়েছে। তবে, সেটা ব্যক্তিগত।” জানা গিয়েছে, আগামী দু’বছর যাবৎ তিনি মন দিয়ে গুগলে কাজ করতে চান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছোটবেলা থেকেই নিজের মামাবাড়ি মল্লারপুরে বড় হয়েছেন বিশাখ। তাঁর বাবা মুর্শিদাবাদের গ্রামেই চাষাবাদ করেন এবং মা হলেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বিশাখ উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বাদশ স্থান অর্জন করেছিলেন। পাশাপাশি, রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবন থেকে পাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। এমতাবস্থায়, তিনি কার্যত এক বিরল নজির স্থাপন করেছেন। ফেসবুক, গুগল এবং অ্যামাজনের মত সংস্থা থেকে তিনি একইসাথে চাকরির প্রস্তাব পান। এদিকে, প্রথমে বিশাখ ফেসবুকে যোগদান করার ইচ্ছে জানালেও পরে তা পরিবর্তন করেন।